রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি আবুল বাশার টুকুর বাড়ীতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৫ অক্টোবর) দিবাগত রাত ৩টায় রূপগঞ্জ থানাধীন পশ্চিমগাঁও এলাকায় সমশের আলী ওরফে সমশের মেম্বারের নেতৃত্বে এ হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন টুকু। তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় লিখিত অভিযোগ করেও থানা পুলিশের কোন সহযোগীতা পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেন। সমশের আলী কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার। এবিষয়ে তিনি অভিযোগ করে বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় আমার কাছে কল এলো যে, প্রায় দেড় ২’শ লোক হাতে লাঠি- সোটা ও রামদাসহ দেশিয় বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার বাড়ীর গেট ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করছে। এর একটু পরেই আমাকে আবার ফোন করলো, তারা অলরেডি ঢুকে গেছে, বাড়ীর দরজা-টরজা ভেঙ্গে ফ্রিজ-ট্রিজ গরু-ছাগল সব লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে। তখন আমি তাদের জিজ্ঞেস করলাম, কারা এসব করছে?
বললো, পুনবার্সন এলাকায় সমশের মেম্বারের (কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার) নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হচ্ছে। এরপর সাথে সাথে আমি পুলিশ ফাঁড়ির এস আই ফারুক সাহেবকে ফোন দিয়ে পুরো ঘটনা বললাম। তিনি রাত সাড়ে ৯টায় আমাকে ফোন দিয়ে বলে আপনার একটা গরু আমরা উদ্ধার করতে পেরেছি থানা এসে নিয়ে যান। আমি বললাম, আমার কেয়ারটেকার ভয়ে পালাতে গিয়ে আহত হয়েছে। এরাতে থানায় পাঠানোর মত আমার লোক নাই। সকালে এসে নিয়ে যাবো। এরপর রাত ১টায় আবারও তারা আমার বাসায় হামলা চালায়। এবার তারা ট্রাক নিয়ে এসে বড় বড় জিনিসপত্র যা যা ছিলো সব ট্রাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। আমি আবারও এস আই ফারুককে ফোন দিলে তিনি একবার শুধু ফোনটা ধরে কেটে দিলো, আর কথা বলেনি। তারা রাত একটা থেকে ৪ পর্যন্ত তান্ডব চালায়। এ ঘটনায় আমার প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, সকালে ওসি সাহেবের কাছে গেলাম। তাদের যে ধরনের ভাব দেখলাম, মনে হলো আমরাই যেন বড় অপরাধী। তারপর আমি তাকে বললাম, আপনি ঘটনাটা আগে জানেন মামলা নেন আর না নেন আপাদের ইচ্ছা। আমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি, আমার দায়িত্ব আপনাদের জানানো। তাই আসলাম। রূপগঞ্জ থানা থেকে এখানকার দূরত্ব আনুমানিক তিন মিনিটের মত হবে। কিন্তু সন্ত্রাসীরা আমার বাড়ীতে প্রায় ৪ ঘন্টা তান্ডিব চালিয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আমার বাড়ী এ ধরনের হামলা ভাংচুর ও লুটপাটের পরও দুপুর হয়ে গেলো এখন পর্যন্ত কোন তদন্তের জন্য কোন পুলিশ আসেনি। আমি জানতে পেরেছি, সমশের গাজী সাহেবের লোক। তারা চায় মানুষকে মাইরা ধইরা তাদের পক্ষে নিতে। এটা আজকে নতুন না। আমি পনেরো বছর যাবত এখানে বসবাস করি। গত পনেরো বছরে আমার বাড়ীতে ৫ বার হামলা হয়েছে। আমি ওনাকে (গোলাম দস্তগীর গাজী) পছন্দ করি, তাই ওনার কাছে যাই না। সাংগঠনিকভাবে ওনি সঠিক লোক না। অন্যকিছু নিয়ে তার সাথে আমার বিরোধ নেই। এদিকে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মো: শাহজাহান ভূঁইয়া বলেন, আপনারা জানেন আপামর জনসমর্থনে আমি এ বছর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশি। এ বিষয়ে আমার সমর্থকরা বিভিন্ন এলাকায় ব্যানার ফ্যাস্টুন ও পোস্টার লাগিয়েছে।
এগুলো রাত্র হলেই তারা ছিড়ে ফেলে। ওনি যেহেতু আমার সিনিয়র সহ সভাপতি এবং আওয়ামী লীগের দুর্দিনে বিভিন্ন মামলা হামলা উপেক্ষা করে আমাদের এই টুকু ভাই সব সময়ই আমাদের সহযোগীতা করেছে। সামনে নির্বাচন সকল ত্যাগীরা আজ একদিকে আর হাইব্রিডরা সব একদিকে। আজ টুকু ভাইয়ের বাড়ীতে হামলা হয়েছে এ কারণে যে, সে আমাকে সমর্থন করে। তার উপর হামলা করে সাধারণ মানুষদের মনে একটা ভয়ভীতি সৃষ্টি যাতে তারা আমাদের কাছ থেকে সরে যায়। কারণ, আমরা যেখানেই যাচ্ছি হাজার হাজার মানুষ আমাদের সমর্থন করছে। টুকু ভাইয়ের বাড়ীতে হামলা হওয়ার সাথে আমি ওসিকে বলছি। একটা থানা থেকে আসতে এত সময় লাগেনা। তারা অভিযোগ করার পরও এখন দুপুর হয়ে গেলো, কোন পুলিশ তদন্তের জন্যও আসেনি। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। পাশাপাশি এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে কাঞ্চন পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, আমি রূপগঞ্জবাসীকে এসব হামলাকারিদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি যাতে বিদেশী হায়নাদের এ ধরনের অত্যাচার থেকে আমরা মুক্তি পাই।