আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘আপনারা ফাঁকা মাঠে তাফালিং করবেন, আর আওয়ামী লীগ আঙুল চুষবে, এটা মনে করবেন না। তিনি বলেন, ‘রাজপথ বিএনপির বাপ-দাদার সম্পত্তি নয়। রাজপথ জনগণের।
মঙ্গলবার রাজধানীর লালবাগে ২৩, ২৪, ২৫ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ড এবং থানা (লালবাগ) আওয়ামী লীগের সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলন চলাকালে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কয়েক দফা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। তবে কেন্দ্রীয় ও নগর নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি অনুকূলে আসে।
লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান জামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক ও কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, কেন্দ্রীয় নেতা ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির নেতারা বলেছেন তারা এখন থেকে রাজপথ দখল করবেন। রাজপথ বিএনপির বাপ-দাদার সম্পত্তি নয়। রাজপথ জনগণের। রাজপথ এই নগরীর। রাজপথ ঢাকাবাসীর। এটা বিএনপির পৈতৃক সম্পত্তি নয়।’ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগের কর্মীরা সংযমী হয়ে, সতর্ক অবস্থানে মাঠে অবস্থান নেবেন। মাঠ ছাড়ব না, অবস্থান নিতে হবে।’
ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘রাজপথে আন্দোলন করুন, শান্তিপূর্ণভাবে আসুন। মোকাবিলা হবে রাজপথে। রাজপথে খেলা হবে। লাফালাফি করবেন না, বাড়াবাড়ি করবেন না। ২২ দলীয় জোট গতবারও ছিল। সেই ২২ দলের অবস্থা জগা-খিচুড়ি, ছত্রভঙ্গ অবস্থা। এবারও ২২ দলীয় জোটের অবস্থান আষাঢ়ের তর্জন-গর্জন।’
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে, ক্যাম্পাসে যারা বিশৃঙ্খলা করবে, ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনায় ক্ষতি করবে, যারা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করবে, শেখ হাসিনা তাদের রেহাই দেবেন না।’
দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারাও বাড়াবাড়ি করবেন না। নির্বাচনের ১৪ মাস বাকি। আপনারা এখন স্লোগান, পালটা স্লোগান শুরু করেছেন। শোডাউন দিয়ে কেউ এমপি হতে পারবেন না। কেউ নেতা হতে পারবেন না। শেখ হাসিনার কাছে সবার হিসাব-নিকাশ জমা আছে। ওই এলাকার জনগণের কাছে যে জনপ্রিয়, সেই হবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী। পালটাপালটি করে কেউ কাউকে ঠেকাবেন, এটা হবে না।’
দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনাদের কষ্ট আমাদের সৃষ্ট নয়। জীবনযাত্রার মান সারাবিশ্বে বেড়ে গেছে। ইউক্রেন যুদ্ধ এই সংকটকে আরও প্রকট করেছে। শেখ হাসিনা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছেন। চিন্তা করবেন না বাংলাদেশে এমন কোনো সংকট হবে না। আগামী দিনগুলো ভালোই যাবে। এখনই আস্তে আস্তে স্বস্তিতে ফিরে যাচ্ছি। আপনারা শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখুন। এই সংকট বেশি দিন থাকবে না। এই দুর্দিন চলে যাবে। আবার সুদিন আসবে। অপেক্ষা করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক দলীয় নেতাকর্মীদের বলেন, ‘নৌকার স্লোগান দেওয়ার সময় আসবে। তখন আমি নিজেই বের হবো এ স্লোগান নিয়ে। গতবারও স্লোগান দিয়েছিলাম, এবারও বের হব। আগাম কিছু বলবেন না।’