নগর প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রীয় আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর বিক্রি ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। এর মধ্যে পূণরায় নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার বরাবর গোগনগর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড মেম্বার জাহাঙ্গীর আলম ও তার ভাই আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার স্বরুপ আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর দেওয়ার নাম করে গরীব ও অসহায় মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে স্মারক লিপি প্রদান করেছে ভূক্তভোগীরা।
সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে ৯ জন ভূক্তভোগী আলাদা আলাদা স্বাক্ষরে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ জানান। ভূক্তভোগীরা হলেন, জাহাঙ্গীর মেম্বার এর আপন চাচা ৭ নং ওয়ার্ডবাসী মো. এমদাদ (৫৯) পিতা হানিফ সরদার, তার কাছ থেকে ১.৩.০০০ টাকা, নয়ন মনি(৩০) পিতা. আনোয়ার হোসেন তার কাজ থেকে ১.৫০.০০০ হাজার টাকা, মুক্তা রানী সরকার(২৯) পিতা, গনেশ চন্দ্র সরকার থেকে নেওয়া হয়েছে ১.৪০.০০০ হাজার টাকা, মোসা: রুবিনা আক্তার(৩৮) পিতা. মহিজ উদ্দিন থেকে ১.৫০.০০০ হাজার টাকা, হজরত আলী (৫৮) পিতা. গুল মোহাম্মদ থেকে ১.৫০.০০০ হাজার টাকা, নিপা আক্তার(৩৫) পিতা. এমদাদ হোসেন কাজ থেকে ১.৫০.০০০ হাজার টাকা, সাথী আক্তার (২৯) পিতা. আবু কালাম কাজী কাজ থেথে ১.৫০.০০০ হাজার টাকা. সালমা আক্তার (২৪) পিতা. মোকলেছ মোল্লা থেকে ১.৫৮.০০০ হাজার টাকা, জাহানুর (৫২) পিতা.নূর মোহাম্মদ কাজ থেকে ১.৫০.০০০ হাজার টাকা নেন তারা।
ভ’ক্তভোগীদের একজন সালমা আক্তার। তার অভিযোগ টি পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো-‘আমি সালমা আক্তার (২৪), জাতীয় পরিচয় পত্র নং- ৩৩০৮৩২৪১৮৯, পিতা: মোকলেছ মোল্লা, মাতা: ফরিদা বেগম, সাং- নতুন সৈয়দপুর, নারায়ণগঞ্জ সদর, নারায়ণগঞ্জ-১৪০০। আপনার কার্যালয়ে হাজির হইয়া নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়ন এর ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, পিতা: মৃত ইয়ার হোসেন সরদার, সাং- নতুন সৈয়দপুর, ওয়ার্ড নং-৭, নারায়ণগঞ্জ সদর, নারায়ণগঞ্জ এর বিরুদ্ধে এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করিতেছি যে, আমি নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানাধীন গোগনগর ইউনিয়ন এর নতুন সৈয়দপুরের একজন বাসিন্দা। আমি একজন গৃহহীন হওয়ায় দীর্ঘদিন যাবৎ আমার স্বামী-সন্তান নিয়া বিভিন্ন সময় মাটি ভাড়া অথবা ঘর ভাড়া নিয়া বসবাস করিয়া আসিতেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার রূপকার মাননীয় প্রধান মন্ত্রী মহোদয়ের গৃহায়ন ও আশ্রয়ন প্রকল্পের অধীনে দুস্থ ও গৃহহীন ব্যক্তিদের জায়গা সহ ঘর বরাদ্দ দিয়া আসিতেছিল।
গোগনগর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার আমার অনুকূলে জায়গাসহ ঘর বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলিয়া অনুমান ০২ বছর পূর্বে আমার নিকট থেকে ১,৫৮,০০০/- (এক লক্ষ আটান্ন হাজার) টাকা নিয়াছিল। আমি তাহার কথায় বিশ্বাস স্থাপন করিয়া সরল বিশ্বাসে বিগত ০২ বছর পূর্বে এনজিও ও বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট হইতে ঋণ গ্রহণ করিয়া জায়গাসহ ঘর পাওয়ার জন্য তাহাকে উক্ত টাকা প্রদান করি। পরবর্তীতে সে আমার অনুকূলে জায়গাসহ ঘর বরাদ্দ না দিয়া এবং আমার টাকা ফেরত না দিয়া বিভিন্ন অযুহাত দেখাইয়া আমাকে ঘুরাইতেছে। আমি টাকা চাইতে গেলে তিনি নানান টালবাহান করেন। আমি মেম্বারের নিকট পুনরায় টাকা চাইতে গেলে ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার আমাকে বিভিন্ন প্রকার হয়রানীসহ হুমকি-ধমিক প্রদান করিতেছে। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করিয়াও ব্যর্থ হওয়ায় আপনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করিলাম। অতএব, মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন এই যে, আমার প্রদানকৃত টাকা ফেরত প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনার সদয় মর্জি কামনা করছি।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহামুদুল হক ভূক্তভোগী আপনারা এতা দিন কোথায় ছিলেন। তারা ঘর দেওয়ার কথা বলে যদি টাকা নিয়ে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেদারুল ইসলাম বলেন, এর আগের কিছু মানুষ এমন অভিয়োগ করেছিলো আমরা তাদের টাকা ফিরত দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। আপনারা অভিযোগ দিয়েছেন সেটা যাচাই-বাছাই করে আমরা দেখবো যদি আপনাদের থেকে টাকা নিয়ে থাকে তাহলে সেটা ফিতর দিতে হবে। কারন এটা প্রধানমন্ত্রী উপহার এর ঘর এটা থেকে কারো এক টাকা খাওয়া সুযোগ নেই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্যানেল চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম মেম্বার মুঠোফোনে জানান, আমার চাচা এমদাদ হোসেন এর সাথে আমাদের পূর্বে সম্পত্তি নিয়ে একটি ঝামেলা আছে। তাই সে আমার নামে অভিযোগ করেছে। বর্তমানে গোগনগর ইউনিয়নের মধ্যে তিনটি ভাগ রয়েছে। গত নির্বাচন এবং কোরবানীর হাট নিয়ে অনেক সাথে ঝামেলা হয়েছে সেটাকে কেন্দ্র করে এখন তারা মেম্বাদের নামে এসব অভিযোগ দিচ্ছে। যা সবটা মিথ্যা।