ফাইল ছবি
হংকং একাদশের বিপক্ষে কেন খেলতে মাঠে নামেননি লিওনেল মেসি, তা নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। হংকং সরকার মেসির খেলতে না নামার পেছনে দেখছেন রাজনৈতিক কারণকে। তাদের মতে মেসি,রাজনৈতিক কারণেই হংকংয়ে খেলতে নামেননি।
মেসি তখন জানিয়েছিলেনও, কেন হংকংয়ে মাঠে নামতে পারেননি তিনি। তবুও এ নিয়ে তুমুল সমালোচনা চলছে। অবশেষে আবারও এ নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন আর্জেন্টাইন এই তারকা। এক ভিডিও বার্তায় তিনি স্পষ্ট করেছেন, রাজনৈতিক কোনো কারণই ছিল না হংকংয়ের মাঠে খেলতে না নামার। সেদিন মূলত ইনজুরির কারণে অনেক চেষ্টা করেও মাঠে নামতে পারিনি।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে চীন সফরে প্রীতি ম্যাচ খেলতে হংকং যায় লিওনেল মেসির ক্লাব ইন্টার মায়ামি। হংকং একাদশের বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে জয় পায় মিয়মি। ওই ম্যাচে পুরোটা সময় বেঞ্চে বসে কাটান মেসি। এমনকি লুইস সুয়ারেজকেও মাঠে নামানো হয়নি।
মেসিকে মাঠে নামতে না তেখে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন দর্শকরা। তারা গ্যালারিতেই ‘রিফান্ড, রিফান্ড’ বলে চিৎকার করতে থাকে। কমপক্ষে প্রায় ১০০০ হংকং ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৪ হাজার) দিয়ে ৪০ হাজার দর্শক টিকিট কিনেছিলো শুধু মেসির খেলা দেখার জন্য। অনেকে ৫ হাজার হংকং ডলার দিয়েও টিকিট কিনেছিলো। কিন্তু যার খেলাই দেখা গেলো না, টিকিট কিনে কী লাভ হলো তাহলে? সে কারণেই দর্শকরা মাঠেই টাকা ফেরত দেয়ার জন্য চিৎকার করতে থাকে।
প্রবল চাপের মুখে দর্শকদের টিকেটের অর্ধেক অর্থ ফেরত দেওয়ার কথাও জানায় আয়োজকরা। তখন তাদের পক্ষ থেকেও মেসিকে না খেলানোর যথার্থ কারণ জানতে চাওয়া হয়েছিল। ওই ম্যাচের তিনদিন পর জাপানের রাজধানী টোকিও সফরে দেশটির ক্লাব ভিসেল কোবের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে বদলি হিসেবে ৩০ মিনিটের বেশি সময় খেলেন আটবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী, তাতে হংকংয়ের দর্শকদের ক্ষোভ বাড়ে আরও।
হংকংয়ে মেসির খেলতে না নামার কারণে চীনে আর্জেন্টিনার প্রীতি ম্যাচ খেলার কথা ছিল, সে ম্যাচটি বাতিল করে দিয়েছে চীনা কর্তৃপক্ষ। আগামী মাসে হাংঝুতে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলার কথা ছিল আর্জেন্টিনার।
এমন পরিস্থিতিতে মুখ খললেন মেসি। সবকিছু শান্ত করার উদ্দেশ্যে সোমবার মেসি চীনের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ‘উইবো’-তে সেদিনের ঘটনা তুলে ধরলেন।
তিনি লিখেন, ‘হংকংয়ের সেই ম্যাচের পর অনেক কথা বলা হয়েছে, আমি সেসব শুনেছি ও পড়েছি। সত্যিকারের কারণটা জানাতে এবং কারো যেন ভুল কোনো তথ্য পড়তে না হয়, সেজন্যই আমি এই ভিডিও বার্তা দিচ্ছি। অনেককে বলতে শুনেছি যে, রাজনৈতিক কারণে আমি ওই ম্যাচে খেলিনি। আরও অনেক কথা বলা হয়েছে, যার কোনোটিই সত্যি নয়।’
মেসি আরও বলেন, ‘এটাই যদি কারণ হতো, তাহলে আমি জাপানে যেতাম না, চীনেও সফর করতাম না, যা আগেও অনেকবার আমি করেছি। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে চীনের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ট ও বিশেষ একটা সম্পর্ক আছে।’
‘আগে সংবাদ সম্মেলনে যেমনটা বলেছিলাম, আমার পেশিতে চোট ছিল এবং সৌদি আরবে প্রথম ম্যাচেও খেলতে পারিনি আমি। দ্বিতীয় ম্যাচে কিছুটা সময় খেলার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু সমস্যা আরও বাড়ে। এরপর (হংকং ম্যাচের আগের দিন) আমি অনুশীলনের চেষ্টা করি এবং যারা অনুশীলন দেখতে এসেছিলেন তাদের জন্য চেষ্টা করেছিলাম।’
পরে চোটের অবস্থা কিছুটা ভালো হওয়ার কারণেই জাপানে খেলতে পেরেছিলেন বলে জানালেন মেসি। বললেন, ফিটনেস ফিরে পেতে সেটা দরকার ছিল।
আগামী মাসে চীনের বেইজিংয়ে আরেক প্রীতি ম্যাচে আইভরি কোস্টের মুখোমুখি হওয়ার কথা রয়েছে আর্জেন্টিনার। তবে এই ম্যাচ মাঠে গড়ানো নিয়েও শঙ্কা রয়েছে, যদিও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কিছু জানানো হয়নি।