নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাউসার আশা বলেছেন, মডেল গ্রুপের কর্ণধার মাসুদ সাহেব অত্যন্ত সম্মানিত একজন ব্যক্তিত্ব। আধুনিক বাংলাদেশের রুপকার শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে যেভাবে মাসুদ সাহেবের ব্যানার, ফেস্টুন আর গাড়ি বহর আমরা দেখেছি, তা দেখে আমি আনন্দিত। তবে, আরেকটু আনন্দ পেতাম যদি বিগত ১৫ বছরে এই দলটার উপর দিয়ে যে অত্যাচার-জুলুম গেছে তখন তিনি কোনো একটা প্রোগ্রাম যদি এভাবে করতেন। তাহলে এখন যে প্রশ্ন উঠছে হয়তো এসব প্রশ্ন কেউ করতো না। আমরা কিন্তু পোগ্রাম করেছি কেউ কিন্তু আমাদেরকে নিয়ে এইসব প্রশ্ন তোলে না। কারণ আমরা আগে থেকেই করে এসেছি। তাই বলা যায় যে হঠাৎ করে একটা জিনিস নতুন করে আসলে মানুষ প্রশ্ন করবেনই।
তিনি গনমাধ্যমের কাছে এক স্বাক্ষাতকারে আরো বলেন, একজন রাজনৈতিক কর্মীর আকাঙ্ক্ষা থাকতেই পারেন যে তিনি জনপ্রতিনিধিত্ব করবেন। সেটা মেম্বার থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদে নিজের এলাকাকে নিয়ে প্রতিনিধিত্ব করা। এটা দোষের কিছু না। টাকা ছাড়া কোনো কিছুই সম্ভব না। তবে তার মানে এই না যে রাজনীতিটা করতে গেলে টাকাটাই লাগবে। রাজনীতিতে অর্থকে না ত্যাগ, পরিশ্রম আর আদর্শিক জায়গাকে ধরা হয়।
নিজের বাবাকে নিয়ে আশা বলে, আমার বাবা নারায়ণগঞ্জের অনেক বড় শিল্পপতি না কিংবা অঢেল অর্থের মালিকও না। তিনি নির্বাচন আর রাজনীতি করতে গিয়ে নিজের সহায়সম্পদ অনেক বিক্রি করতে হয়েছে। আমাদের মোট ৬ টা নমিনেশনে কখনোই কনো অর্থের লেনদেন হয়েছে বলে আমার জানা নেই। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাদের উপর আস্থা রেখেছেন এবং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সাহেব আমার দাদা জালাল হাজী সাহেবকেও নমিনেশন দিয়েছিলেন। তাই নমিনেশনের ক্ষেত্রে টাকাটাই মূখ্য এটা আমি আমার দলের ক্ষেত্রে অবোজ করছি।
আমার বাবা কালাম সাহেব একজন বিচক্ষণ মানুষ। তাই তিনি যে বলেছেন ‘১৬ বছর মাঠে ছিল না এখন এমপি হতে চায়’ এটা একটা মেসেজ। আমরা এসব বিষয় ফেস করে আসছি। দেখেছি নির্বাচন আসলেই যে দলের সম্ভাবনা থাকে অনেকে সে দলের ক্যানডিডেট হতে চায়। দেখা যায় প্রশাসন থেকে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ নির্বাচনটা করতে চায়।
তিনি বলেছেন, বন্দর আর নারায়ণগঞ্জ মিলে আমাদের সদরের আসন। বন্দর পৌরসভা করার পেছনে আমার বাবার অবদান ছিল। পরবর্তীতে পৌরসভা থেকে বন্দরটা সিটি করপোরেশনে এড হয়েছে। যার ফলে বন্দরবাসী নাগরিক সুযোগ-সুবিধা যে ভোগ করেছে সেটার প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে কালাম সাহেবের অবদান রয়েছে। তারপর বাগবাড়ি হাসপাতাল থেকে শুরু করে কদম রসূল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজসহ অনেক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড কালাম সাহেব করেছেন। আবার বন্দরের বিভিন্ন পিচ ঢালাই সাবধী থেকে শুরু করে বিভিন্ন ইউনিয়নগুলোর পিচ ঢালাইয়ের রাস্তায় তার অবদান আছে। সর্বপরি তিনি সৎ মানুষ হিসেবে পরিচিত। নারায়ণগঞ্জে উনিই একমাত্র এমপি ছিল যেকিনা নারায়ণগঞ্জে অফিস করেছেন। আমাদের বাসায় অফিস থাকায় সকাল থেকে যেকোনো সময়ে মানুষের যাতায়াত ছিল। নারায়ণগঞ্জের কোনো এমপি সাহেবদের অফিস না থাকায় মানুষের অবাধ বিচরণও ছিল না। সবমিলিয়ে তিনি নারায়ণগঞ্জের জনগণ এবং দলের জন্য যোগ্য।
সুদিনে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি বিতর্ক হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালা আমাদের ফ্যাসিস্ট থেকে মুক্তি দিয়েছেন। আমরা মুক্ত হয়েছি। গণমাধ্যমও ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নির্যাতিত হয়েছে। যার মধ্যে আমার জানা মতে নিউজ নারায়ণগঞ্জ সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত। আমাদের নানাভাবে নির্যাতন করা হতো মামলা, হামলা,জেল-জুলুম দিয়ে। তবে আনি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে মনে করি আমাদের এখনো সুদিন আসেনি। কারণ এখনো একটা অনির্বাচিত সরকার আছে। তাদেরকে নিয়ে দেশে এবং আন্তর্জাতিকভাবে নানা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ঠিক আমাদের বিএনপিকে নিয়ে আগে থেকেই ষড়যন্ত্র অব্যাহত ছিল। যারা বর্তমানকে সুদিন ভাবছে তারাই মূলত চাঁদাবাজি,সন্ত্রাসীটা করছে। আর আমি এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকে প্রতিবাদ করায় বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।
সেলিম ওসমানের সঙ্গে নিজের আঁতাতের প্রশ্নের উত্তরে আশা বলেন, যারা সেলিম ওসমান সাহেবদের সঙ্গে আঁতাত রেখে চলেছেন তারা কিন্তু মামলা বা হয়রানি হয়নি। আমি সবকিছুর শিকার হয়েছি। আমি কাউন্সিলর হবার পর আমাদের এক মাদ্রাসার পোগ্রামে আমি বিশেষ অতিথি ছিলাম তখন দেখা হয়েছে। এবং দ্বিতীয়বার আমার ওয়ার্ডেরই আরেকটি স্কুলের পোগ্রামে তার সঙ্গে দেখা হয়েছি। সবমিলিয়ে এই দুইটা ছবি দিয়ে আমাকে জড়িয়ে আমার অর্জনটাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে। আমার সঙ্গে তার আঁতাত ছিল না।