বিশ্ববাজারে চলতি বছর প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম উঠেছিল রেকর্ড ২ হাজার ৪০০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ২ লাখ ৬৩ হাজার ৬২৫ টাকা। বর্তমান বাজারে স্বর্ণের দাম তার চেয়ে কিছুটা কম হলেও এখনো বজায় আছে পূর্বের সেই চড়াভাব এবং আশঙ্কা রয়েছে, যেকোনো সময় ফের আগের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যেতে পারে।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামের এই যে নাটকীয় ওঠানামা, আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এটি পুরোপুরি স্বাভাবিক নয়। তাদের ধারণা, অস্থিতিশীল স্বর্ণের বাজারের পেছনের নাটের গুরু বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্বর্ণ উৎপাদনকারী দেশ চীন। কারণ দেশটিতে মূল্যবান এই ধাতুটি ক্রয় এবং সঞ্চয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে লাগামহীনভাবে।আন্তর্জাতিক বাজারে এতদিন পর্যন্ত যুগপৎভাবে স্বর্ণের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ছিল চীন ও ভারত। কিন্তু গত বছর চাহিদার নিরিখে ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে চীন। ২০২৩ সালে শতকরা হিসাবে যেখানে চীনা ক্রেতাদের মধ্যে স্বর্ণালংকার কেনার প্রবণতা বেড়েছে ১০ শতাংশ, সেখানে ভারতীয় ক্রেতাদের মধ্যে স্বর্ণের অলংকার কেনার প্রবণতা কমেছে ৬ শতাংশ। স্বর্ণালংকার কেনার প্রবণতার পাশাপাশি স্বর্ণকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে বিনিয়োগের হারও বেড়েছে চীনে।এই প্রবণতা থেকে মুক্ত নয় চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও। টানা ১৭ মাস ধরে আন্তর্জাতিক বাজারের পাশাপাশি অন্যান্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে স্বর্ণ কিনছে পিপলস ব্যাংক অব চায়না। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৪ সালজুড়েও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।এ ছাড়া অভ্যন্তরীণভাবে বিশ্বের সর্বোচ্চ স্বর্ণ উৎপাদনকারী দেশ হলেও বেসরকারিভাবে স্বর্ণ আমদানির মাত্রা ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে চীন। গত দুই বছরে ২ হাজার ৮০০ টনেরও বেশি স্বর্ণ আমদানি করেছে চীন, যা যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমে থাকা স্বর্ণের মজুতের এক তৃতীয়াংশের সমান। যদিও এক বিবৃতিতে চীনের সরকার জনগণকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ক্রেতারা যদি স্বর্ণ কেনায় লাগাম না টানেন, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে জাতীয় অর্থনীতিতে ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।