খেলাধুলা ডেস্ক: ফ্রান্সের বিপক্ষে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে কাতার বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে আর্জেন্টিনা। দারুণ রোমাঞ্চে ভরা এই ফাইনালকে বলা হচ্ছে বিশ্বকাপ ইতিহাসের সেরা ফাইনাল। তবে ম্যাচ শেষে ডালপালা মেলে বিতর্ক। শিরোপা নিশ্চিতের ম্যাচটিতে রেফারির কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন ফ্রান্সের সমর্থকরা। অনেকেই চান, বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ আবার অনুষ্ঠিত হোক। এজন্য একটি পিটিশনও করা হয়েছে। শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) পর্যন্ত দুই লাখের বেশি মানুষ সই করেছে ওই পিটিশনে।
লুসাইল স্টেডিয়ামে গত ১৮ ডিসেম্বর শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের শেষে ৩-৩ গোলে সমতা থাকলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে ফ্রান্সকে ৪-২ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা।
ম্যাচের ২৩তম মিনিটেই পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন মেসি। বল নিয়ে ডিবক্সে ঢুকে পড়ার সময় ডি মারিয়াকে বাঁধা দেন ওসমান দেম্বেলে। ডি মারিয়া পড়ে গেলে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন মেসি। পঞ্চম বিশ্বকাপে এটি মেসির ১২তম গোল। এই গোলে তিনি পেলেকে ছুঁয়ে ফেলেন।
ম্যাচের ৭৮ মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে এগিয়ে থাকা আর্জেন্টিনার বিপক্ষে দুই মিনিটেরও কম সময়ে জোড়া গোল করে ফ্রান্সকে সমতায় ফেরান কিলিয়ান এমবাপ্পে। অতিরিক্ত সময়ে লিওনেল মেসির গোলে ফের এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।
তবে গোলের হ্যাটট্রিক করে দলকে ফের সমতায় ফেরান পিএসজির ফরাসি ফরোয়ার্ড। পরে টাইব্রেকারে গড়ানো ম্যাচে কিংসলে ক্যোমান ও অউরিলিয়ে শুয়েমিনি পেনাল্টি মিস করলে ৪-২ ব্যবধানে জয় পায় আর্জেন্টিনা।
শিরোপা হাতছাড়া হওয়া সেই ম্যাচে পোলিশ রেফারি সিমন মারচিনিয়াকের কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তোষের সৃষ্টি হয় ফ্রান্স সমর্থকদের মধ্যে। শিরোপা জেতার ম্যাচে আর্জেন্টিনার তৃতীয় ও মেসির করা দ্বিতীয় গোলটি নিয়ে প্রশ্ন উঠে। ফ্রান্সের গণমাধ্যম ‘এল-ইকুইপ’ দাবি করে, আর্জেন্টিনার তৃতীয় গোলটি অবৈধ ছিল। কারণ গোল হওয়ার সময় মাঠে আর্জেন্টাইন বদলি খেলোয়াড়েরা ঢুকে পড়েছিলেন।
এছাড়া, ম্যাচের ২৩ মিনিটে মারচিনিয়াকের দেয়া পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক চলছে। ফ্রান্স সমর্থকদের মতে, ডি মারিয়াকে ফাউল করেননি দেম্বেলে। উল্টো ৩৬তম মিনিটে ডি মারিয়ার গোলের আগে ফাউলের শিকার হয়েছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। কিন্তু রেফারি তা দেখেননি।
তাই ফাইনাল ম্যাচটি আবারও খেলার দাবিতে পিটিশন করেছেন ফ্রান্স সমর্থকরা। অনলাইনে পিটিশনের প্ল্যাটফর্ম ‘মেসওপিনিয়নস’-এ এই পিটিশন করা হয়েছে। আবার খেলুন ফ্রান্স-আর্জেন্টিনা ম্যাচ! শিরোনামের পিটিশনে বলা হয়েছে, ‘রেফারিকে কিনে নেয়া হয়েছিল, পেনাল্টিটি হয় না + দ্বিতীয় গোলের আগে এমবাপ্পে ফাউলের শিকার হন। ম্যাচটি পুনরায় খেলার দাবিতে সই করুন।’
সর্বোচ্চ সই পাওয়া শীর্ষ ২০টি পিটিশনের মধ্যে আছে এটি। ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে জানা গেছে, ৫ লাখ সই টপকে গেলে এই পিটিশন ফরাসি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সর্বোচ্চ সই পাওয়া তিনটি পিটিশনের একটি হবে। পিটিশনে সই করা বেশির ভাগ নাগরিকই ফ্রান্সের এবং মন্তব্যসংখ্যা শনিবার ৯০ হাজার ছাড়িয়েছে।
মন্তব্যকারীদের একজন বলেন, ‘রেফারি দুর্নীতি করেছেন।’ আরেকজনের মন্তব্য, ‘রেফারির আচরণ সন্দেহজনক ছিল।’
উল্লেখ্য, হারের জ্বালা সইতে না পেরে এর আগেও পিটিশন করেছেন ফ্রান্সের ফুটবলপ্রেমীরা। দেড় বছর আগে ইউরোর শেষ ষোলোয় সুইজারল্যান্ডের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল ফরাসিরা। এই হারের পরও পিটিশন করা হয়েছিল।