কারাগারে কোনো রাজবন্দি নেই, বিএনপির অ্যাক্টিভিস্ট আছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।পুলিশ মেমোরিয়াল ডে ২০২৪ উপলক্ষে আজ শনিবার দুপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা যে বলছে হাজার হাজার রাজবন্দি, রাজবন্দি আমাদের কেউ নেই। আমাদের এখানে বন্দি আছে বিএনপির অ্যাক্টিভিস্ট, যারা প্রধান বিচারপতির বাসায় ভাঙচুর করেছে, যারা আমার পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করেছে, আনসারকে পিটিয়ে হত্যা করেছে, যারা আমাদের মেয়েদের গায়ে হাত দিয়েছে।’তিনি বলেন, ‘আমরা ভিডিও থেকে দেখে তাদের শনাক্ত করেছি, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যেটা পুলিশ বাহিনী করছে। কাজে এখানে অন্যায়ভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, রাজনৈতিকভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ দেশে একটা অবাধ, সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন হয়েছে। একটি দল ২০১৪ সালে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে অগ্নি সন্ত্রাসের মাধ্যমে নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিল। ক্রমান্বয়ে তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে। ২০০৮ সালে তারা ৩০টির মতো আসন পেয়েছিল, ২০১৮ সালে ছয়টি আসন পেয়েছে।
‘মুচলেকা দিয়ে রাজনীতি করবেন না বলে যিনি ইংল্যান্ডে আত্মগোপন করেছেন, তার নির্দেশ অনুযায়ী বিএনপি মহাসচিব পদত্যাগ করেছেন। ওখান থেকে তিনি এ দেশে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। এ দেশের মানুষের, এমনকি দলীয় নেতাকর্মীদেরও ভালো-মন্দ বোধ হয় তিনি চান না,’ বলেন তিনি।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই দলটি দিন দিন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।’
বাংলাদেশের যে কোনো প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ দেশের মানুষ বিশ্বাস করে যতদিন প্রধানমন্ত্রী বেঁচে থাকবেন, ততদিন বাংলাদেশ পথ হারাবে না। এটি তাদের বিশ্বাস ও আস্থার জায়গা। প্রধানমন্ত্রী সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করেছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী অত্যন্ত নিরপেক্ষভাবে কমিশনকে সহযোগিতা করেছে। আপনারা দেখেছেন, অনেক মন্ত্রী ধরাশায়ী হয়েছেন। অনেক বড় বড় নেতারা ধরাশায়ী হয়েছেন। কাজেই আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি, এখানে কোনো ধরনের কারচুপি, কোনো ধরনের সাপোর্ট পেয়েছে বলে আমরা মনে করি না। আমরা দেখিনি।’বিএনপি বিভিন্ন দেশে নানা ধরনের অপপ্রচার করছে মন্তব্য করে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির বাসভবন, জাজেস কমপাউন্ডে ভাঙচুর আমরা কখনো দেখি। তারা নিশ্চিত হয়েছে নির্বাচনে এলে জয়ী হতে পারবে না, সে জন্য তারা এ ধরনের অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে এবং বিদেশে যেয়ে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার তারা করে যাচ্ছে। এই অপপ্রচারের সত্যতা এখানে নেই।’স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নির্বাচনের পরে বিদেশি সাংবাদিক যারা এসেছিলেন তারা বলে গেছেন একটা সুন্দর নির্বাচন হয়েছে। আমেরিকার দুএকটি সংস্থা থেকে বলা হয়েছে একটা সুন্দর নির্বাচন হয়েছে। এখন কে কী বললো সেগুলো আমাদের বিষয় নয়।’
গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কোনো হামলা-মামলা আমাদের পুলিশ বাহিনী, আমাদের পলিটিক্যাল বাহিনী করেনি কারও ওপর, তারাই করেছে। তারা করে যদি অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করে—আমরা এসব বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি।’
বিএনপি উদ্দেশ্যমূলকভাবে আবার ষড়যন্ত্রের ক্ষেত্র তৈরি করার চেষ্টা করছে বলেও মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।