শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সাত শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৮ জুন) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইশতিয়াক আহমেদ এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ইউএনও ইশতিয়াক আহমেদের সভাপতিত্বে জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সুলতানসাদী উচ্চ বিদ্যালয়ের দপ্তরির মেয়ে ও স্কুলের এক ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করে আসছিলো আড়াইহাজার সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আকিব। বিষয়টি স্থানীয়রা বেশ কয়েকবার সতর্ক করলেও আকিব কোনো পরোয়া না করে বন্ধুদের নিয়ে ওই স্কুলের ছাত্রীকে উত্যক্ত করতে থাকে। জুনের প্রথম সপ্তাহে স্থানীয়রা আকিবসহ তার বন্ধুদের আটক করে সুলতানসাদী উচ্চ বিদ্যালয়ে সোপর্দ করে।
এরপর সুলতানসাদী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রদীপ বিশ্বাস আকিব ও তার বন্ধুদের ছাত্রীর পেছনে না ঘুরে পড়াশোনার মনোযোগ দেওয়ার কথা বলে সতর্ক করে দেন। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানাবেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ১০ জুন দুপুরে শিক্ষক প্রদীপ বিশ্বাসের ওপর অতর্কিতভাবে আকিব ও তার সহযোগী একই স্কুলের শিক্ষার্থী সিফাত, আকরাম, মেহেদী, মারুফ, সানপ্রিয়া, নাহিদ, সজীব হামলা করে।
আশপাশের শিক্ষকরা দ্রুত ঘটনাস্থলে এলে তারা পালিয়ে যায়। পরে প্রদীপ বিশ্বাসকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় শিক্ষক সমাজে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
পরবর্তীতে ইউএনও এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে শিক্ষকরা শান্ত হন। তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ওই সাত শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়।
এ ব্যাপারে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি ও দুপ্তারা সেন্ট্রাল করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, প্রদীপ বিশ্বাসের ওপর হামলার ঘটনায় শিক্ষক সমাজ বিস্মিত। এটা কাম্য ছিল না। এ ঘটনায় ইউএনও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
ইউএনও ইশতিয়াক আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষকরা সম্মানীয়। শিক্ষককে লাঞ্চিত করার ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ব্যাপারে ৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা কোনো বিদ্যালয়ে যাতে না ঘটে সে ব্যাপারেও সতর্কতামূলক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।