নারায়ণগঞ্জের চাষাড়ায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভেঙ্গে ফেলা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।সংবাদ সম্মেলনে শামীম ওসমান বলেন, ‘২০১৪ সালেই এটা (চাষাড়া জিয়া হল) ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজউক এটাকে ঝুকিপূর্ণ ভবন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। একারণেই এটা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ২ তারিখে আমাদের মিটিং ঘোষণা করা হয়েছে। ৪ তারিখে মিটিং হবে সেখানে এমনি এটা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এটা তো এমনিই ভাঙা হবে। ৩ তারিখ কেন ভাঙতে যাবো। ওরা হয়তো এটাকে ভেঙেছে অথবা ভেঙে পড়েছে। ওরা (বিএনপি) এটা নিয়ে ইস্যু তৈরি করতে চায়। ওরা চায় না এখানে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস প্রতিষ্ঠিত হোক।’
শামীম ওসমান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার তারা (বিএনপির নেতারা) নাকি আমাকে নিয়ে খুব অশ্লীল কথা বলেছে। সাংবাদিকরা বলেছে, নারায়ণগঞ্জে কিছু ঘটলে বিএনপি ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি আপনাকে দায়ী করে কেন। আওয়ামী লীগকে দায়ী করে না, আরো এমপি, মন্ত্রী, মেয়র আছে তাদের দায়ী করে না। আমি মনে করি, তারা একারণেই দায়ী করে কারণ ১৬ জুন আমাকে বোমা মেরে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল। এরাই ক্ষমতায় আসার পর বায়তুল আমানে গুলি করা হয়েছে।’তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি এখানে একটি মঞ্চ হবে। এখানে ১৯৪৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সকল ইতিহাস ধারণ করা হবে। এখানে বিএনপিরও গর্ববোধ করা উচিত। কারণ তাদের পূর্বপুরুষরাও এখানে অবদান রেখেছে। গতকাল দেখলাম আমাকে দায়ী করা হয়েছে। জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল তো থাকারই কথা না। পঞ্চম সংশোধনীতে সুপ্রিম কোর্ট জিয়াউর রহমানের শাসনকে অবৈধ ঘোষণা করেছে।’শামীম ওসমান বলেন, ‘তারা (বিএনপি) নাকি ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে। নারায়ণগঞ্জের জনগণ ও আমি তাদের আল্টিমেটামের শক্তি দেখতে চাই। ওরা খুব নোংরা ও অশ্লীল কথা বলেছে। এ সকল অশ্লীল কথা বলে আমার লোকজনকে ফোন করার আগেই তারা বলল ভাইয়ের বিরুদ্ধে কথা বললে সেন্ট্রালে আমাদের দাম বাড়ে। ভাই মানে আমি শামীম ওসমান। আমার বিরুদ্ধে কথা বলে বড় নেতা হতে পারলে হোক। আমার আপত্তি নেই। কারা এসব কথা বলেছে আমি তাও জানি না। আমি তাদের বলতে চাই, আপনারা পারবেন না। এটা আমাদের কর্তব্য স্মৃতি রক্ষা করা। এখানে কেউ বাধা দিলে আমরা তাদের প্রতিহত করবো,মানুষ প্রতিহত করবে।’
তিনি বলেন, ‘এর আগেও কিছু এক্সট্রিম বামপন্থী এটা নিয়ে কথা বলেছিল। আমি এখানে বসে ওপেন চ্যালেঞ্জ দিয়েছি। তারা আর কোনো কথা বলেনি। এখানে জামায়াত ডান বা বাম নেই। এরা একটা গ্রুপ। ওরা নারায়ণগঞ্জকে অশান্ত করতে চায়।’
শামীম ওসমান বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙতে চাইলে বহু আগেই ভাঙতাম। দিনের বেলা ভাঙতাম। এর আগেও তো ১৯৮৯ সালে জিয়াউর রহমানকে আটকে দিয়েছি। জীবিত অবস্থায়ই তাকে আটকে দিয়েছি। সুতরাং রাতের বেলা ভাঙার প্রশ্ন আসে না। ওরা এটা করে একটা ইস্যু তৈরি করতে চায় যেন এ কাজটা না হয়। এ ধরনের অশান্তির রাজনীতি করার চেষ্টা যারা করেন তাদের বলতে চাই অন্য এলাকায় গিয়ে এসকল কাজ করুন। নারায়ণগঞ্জের মানুষের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে। এমন কিছু করবেন না যেন নারায়ণগঞ্জ অশান্ত হয়ে ওঠে।’তিনি বলেন, ‘আমার দুই নেতা ওবায়দুল কাদের সাহেব ও ওবায়দুল মোক্তাদির সাহেব, তারা বলেছেন, দ্রুত এ কাজটা করো। আমি আশা করি, আগামী ১৫ আগস্ট এ মঞ্চ আমরা ওপেনিং করবো। আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ অন্যান্য নেতাকর্মীদের নিয়েই এটা ৬ দফা ভবন ওপেনিং করবো।’