নারায়ণগঞ্জ শহরের নিতাইগঞ্জ এলাকায় বিস্ফোরণে ধসে পড়া ভবনে এর আগেও দুইবার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। তখন সতর্কও করা হয়েছিল। কিন্তু ভবনের মালিক তা কর্ণপাত করেননি। শনিবার (১৮ মার্চ) তৃতীয়বারের মতো বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে ভবনটিতে।
সকালে নিতাইগঞ্জের ডাইলপট্টি এলাকায় অবস্থিত ‘নাজমা ফ্লাওয়ার’ ভবনটিতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আওলাদ হোসেন (৬০) নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৯ জন।
আহতরা হলেন মো. হোসাইন (৫০), হযরত আলী (৪০), শ্রী রবি দত্ত (৪২), জাকির হোসেন (৪১), মো. বিল্লাল (৪৫) ও জগদীশ সরকার (৬৫)। তারা সবাই শ্রমিক। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
দোতলা ভবনটির নিচতলায় মুদিদোকান মেসার্স গোবিন্দ ভান্ডার। এর ম্যানেজার জয় বলেন, ‘এর আগেও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। তখন আমি আহত হয়েছিলাম। দোকানের ভেতরে গ্যাস জমা ছিল। দোকান খোলার সময় ধূপ জ্বালাতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটেছিল। এর আগে আরেকবার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। তখন জগদীশ সাহা নামের একজন নিহত হন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিষয়টি মালিকপক্ষকে জানিয়েছিলাম। ভবনের মালিক ইলিয়াস দেওয়ান সচরাচর আসেন না। বিস্ফোরণে ঘটনা জানানো হলে তিনি বলেছিলেন, ব্যবস্থা নেবেন।’
তবে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি ভবনের মালিক ইলিয়াস দেওয়ানকে। তার পক্ষে কর্মচারী সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের কোনো রকম নোটিশ দেওয়া হয়নি। এটা একটা পুরাতন বিল্ডিং। আমরা সংস্কার করেই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলাম।’
নিতাইগঞ্জের ভবনটি আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ পাইকারি-খুচরা ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শংকর সাহা জাগো নিউজকে বলেন, ‘এর আগে একই ভবনে দুবার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। বিস্ফোরণে একজন মারাও গিয়েছিল। তাদের বারবার বলার পরও সতর্ক হচ্ছিল না। আজ তৃতীয়বারের মতো বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) কাউন্সিলর শামিন হাবিব বিন্নি। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখানে মালিকপক্ষের গাফিলতি রয়েছে। তাদের আগে থেকেই নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কয়েকবার জরিমানাও করা হয়েছিল। কিন্তু তারা এতে কর্ণপাত করেননি। যে কারণে বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে।’
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপ-পরিচালক ফখরুদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আমরা এখনো লিকেজ দেখতে পাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, আগুনের ঘটনার পর ভবনটি সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। এটি অনেক পুরোনো ভবন। ভবনটির নিচতলায় চাল, ডাল, আটা, লবণসহ নিত্যপণ্যের গুদাম ছিল।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত ফেরদৌস জাগো নিউজকে বলেন, যতটুকু জানতে পেরেছি, এর আগেও নাকি এখানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। আপাতত ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ধরে নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।