গত ২৯ জুন ঢাকায় ও ১ জুলাই সারাদেশে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে নেতাকর্মীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আজ নাটোর জেলা বিএনপির সমাবেশে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হামলা চালিয়ে বিএনপির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, নাটোর জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম বাচ্চুসহ অনেক নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সমাবেশে যাওয়ার পথে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের গাড়িবহরে অতর্কিত হামলা চালিয়ে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর এবং কলাপাড়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মামুন সিকদারসহ অনেক নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করে।’
আজ সকাল থেকে বাগেরহাট জেলা বিএনপি কার্যালয়ের ভেতর বিএনপির গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমসহ নেতাদেরকে পুলিশ বাহিনী অবরুদ্ধ করে রাখে।
নারায়ণগঞ্জ জেলাধীন আড়াইহাজার থানা বিএনপি নেতা ও দুবতারা ইউনিয়ন বিএনপি নেতার ওপর আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলা ও তাদের গুরুতর আহত করা হয়েছে।
গত ৩০ জুন কামরাঙ্গীচর থানার একটি মিথ্যা মামলায় থানা বিএনপির ১ম যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. জহিরুল হকসহ মোট ৬ নেতাকর্মী এবং কোতয়ালী থানার একটি মিথ্যা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের আহ্বায়ক সুমন ভূঁইয়ার জামিন বাতিল ও তাদের কারাগারে পাঠানো হয় বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।
‘এ ছাড়া গত ৩০ জুন দুপুর ১২টার দিকে সাতক্ষীরা জেলাধীন কালিগঞ্জ উপজেলা কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. কামরুজ্জামানকে রতনপুরে নিজ বাড়ি থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। গত ১ জুলাই সন্ধ্যায় ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান রাসেলকে রাজধানীর আজিমপুর অগ্রণী স্কুলের সামনে থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি,’ বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘গতকাল রাত আড়াইটার দিকে রাজধানীর শিশু হাসপাতাল থেকে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক মারজুক আহমেদ আল-আমিনকে সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।’
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে জোর করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী আওয়ামী অবৈধ শাসকগোষ্ঠী বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর ব্যাপক সহিংস আক্রমণ শুরু করেছে। নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের গুরুতর জখমসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের উদ্দেশ্যই হলো—আওয়ামী অবৈধ শাসন নিয়ে কেউ যেন প্রতিবাদ করতে সাহস না পায়।’
বিএনপিসহ সমমনা দল এবং গণতন্ত্রকামী মানুষের চলমান আন্দোলন কর্মসূচিকে বাধাগ্রস্ত করতেই অবৈধ আওয়ামী দখলদার সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও তাদের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে পৈশাচিক উন্মত্ততায় মেতে উঠেছে। এ ধরনের বর্বরতার বিরুদ্ধে ধিক্কার জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। নিষ্ঠুরতা, পৈশাচিকতা, বর্বরতা, অমানবিকতার দৃষ্টান্ত হচ্ছে আওয়ামী লীগ,’ যোগ করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বিবৃতিতে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত নেতাকর্মীদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তি এবং নিখোঁজ নেতাদের শিগগির তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জোর আহ্বান জানান।