আগামী ১৪ ও ১৫ জুন অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট: সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল’ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সফরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী মাজাহান খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ হাই অফিসিয়ালদের একটি দল প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হবেন বলে জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ তার কূটনৈতিক সফর সঙ্গীরা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে মঙ্গলবার (১৩ জুন) সকাল ১০টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যাত্রা করবেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে ৫টায় ফ্লাইটটি জেনেভা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগে বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা জেনেভাতে গিয়ে পৌছেছেন বলে জানা গেছে।
সাংসদ শামীম ওসমানের ব্যাক্তিগত সহকারি হাফিজুর রহমান মান্নান সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওই সফরে আগামী ১৪ জুন ইউএনএইচসিআর প্রধান ফ্লিপো গ্র্যান্ডি হোটেল প্রেসিডেন্ট উইলসনের একটি কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করবেন। পরে প্রধানমন্ত্রী প্যালাইস ডি নেশনস-এ সুইস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন বেরসেটের সাথে সাক্ষাৎ করবেন।
কল-অনের পর বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। এদিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রী প্যালাইস ডি নেশনস-এ ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট ২০২৩’-এর প্লেনারিতে ভাষণ দেবেন। সেখানে পৌঁছনোর পর তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন এডিজি এবং আইএলওর আঞ্চলিক পরিচালক। এছাড়া গেট থেকে সভাস্থল পর্যন্ত লাল গালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার থাকবে।
এছাড়া মাল্টার প্রেসিডেন্ট ড. জর্জ ভেলার সাথেও বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী তার সদর দফতরে ডিজি আইএলও কর্তৃক আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে একটি নৈশভোজে যোগ দেবেন।
১৫ জুন তিনি ডব্লিউইএফ’র অফিসে ডব্লিউইএফ’র এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ক্লাউস শোয়াবের সাথে একটি বৈঠকের পরে ‘এ টক অ্যাট দ্য ডব্লিউইএফ’-এ যোগ দেবেন। সেখানে তিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম আয়োজিত ‘নিউ ইকোনমি অ্যান্ড সোসাইটি ইন স্মার্ট বাংলাদেশ’- শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখবেন। সন্ধ্যায়, ডব্লিউটিও ডিজি ড. ওকোনজো-ইওয়ালা হোটেল প্রেসিডেন্ট উইলসনে তার সাথে সাক্ষাৎ করবেন। এছাড়া সন্ধ্যায় তিনি একটি কমিউনিটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
হাসিনা ১৬ জুন সকাল ১১টায় জেনেভা ত্যাগ করবেন এবং ১৭ জুন ভোরে তিনি ঢাকায় পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ‘দ্য ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট ২০২৩: সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল’ হলো সামাজিক ন্যায়বিচারের সমর্থনে বর্ধিত, সমন্বিত ও সুসংগত পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা মোকাবিলার জন্য বিশ্বনেতাদের আলোচনার জন্য একটি উচ্চ-স্তরের ফোরাম। এটি সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য একটি গ্লোবাল কোয়ালিশন গঠনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ও অবহিত করার সুযোগ দিবে। আন্তর্জাতিক শ্রম অফিসের ৩৪৭তম অধিবেশনে গভর্নিং বডি যেটি গঠন করে।
ফ্রান্সের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ, পানামার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জুয়ান কার্লোস ভারেলা এবং ২০১৪ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী এবং বেশ কয়েকজন উচ্চ-পর্যায়ের অতিথি সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন।
দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলন আরো টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব তৈরিতে সামাজিক ন্যায়বিচারের মূল ভূমিকাকে তুলে ধরবে এবং সামাজিক ন্যায়বিচারকে এগিয়ে নিতে এবং নীতির সুসংগততা নিশ্চিত করার জন্য বর্ধিত এবং যৌথ পদক্ষেপের কৌশল নিয়ে আলোচনা করবে।
এটি অংশগ্রহণকারীদের সামাজিক ন্যায়বিচার সম্পর্কে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং অগ্রাধিকারগুলো ভাগ করে নেয়ার জন্য এবং তারা যে পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করছে তা প্রদর্শন করার জন্য একটি ফোরাম তৈরি করবে। এছাড়া তারা সামাজিক ন্যায়বিচারকে এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আশা করা হচ্ছে যে শীর্ষ সম্মেলনের ফলাফলগুলো বৃহত্তর সামাজিক ন্যায়বিচার অর্জনের জন্য কেন্দ্রীয়তা এবং কৌশলগুলোর অন্যান্য বহুপাক্ষিক ফোরামে আলোচনাকে অবহিত করবে। যেমন ২০২৩ সালে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য শীর্ষ সম্মেলন জি২০ এবং ব্রিকস দেশগুলোর শীর্ষ সম্মেলন। শীর্ষ ওই সম্মেলনে রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান, জাতিসঙ্ঘমহাসচিব, আইএলও মহাপরিচালক এবং নিয়োগকর্তা ও শ্রমিক সংগঠনের উচ্চ-পর্যায়ের প্রতিনিধিরা ভাষণ দিবেন। তথ্য সূত্র: ইউএনবি