নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বিসিক এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেছে গার্মেন্টস শ্রমিকরা। এতে সড়কটিতে কমপক্ষে দুই কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রোববার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সড়কে বৈদ্যুতিক খুঁটি, বাঁশ ও কাঠ ফেলে অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে শ্রমিকরা।খোজ নিয়ে জানা গেছে, গত মার্চের বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন নারায়ণগঞ্জের বিসিক শিল্পাঞ্চলের ক্রোনী গ্রুপের অবন্তী কালার টেক্স লিমিটেডের হাজারো শ্রমিক।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শিল্প পুলিশ ও ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশকে সড়কে দেখা গেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কারখানা তিন দিন বন্ধ ঘোষণা করছে মালিকপক্ষ।ক্রোনী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসলাম সানি জানান, ‘ঈদের আগে সব শ্রমিককে বোনাস দিয়েছি। শিপমেন্ট ঠিকমতো না হওয়ায় মার্চের বেতনটা দিতে পারিনি। আমরা আগামী বুধবারের মধ্যে সবার বেতন পরিশোধ করে দেবো।’
জানা গেছে, এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি এই কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়কে বিক্ষোভ করেন।
কারখানার শ্রমিকরা জানান, গত ৮ এপ্রিল দুপুর পর্যন্ত কাজের পর কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ঈদের আগে বোনাস পেলেও মার্চের বেতন বকেয়া ছিল।কারখানার শ্রমিকরা জানান, গত ৮ এপ্রিল দুপুর পর্যন্ত কাজের পর কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ঈদের আগে বোনাস পেলেও মার্চের বেতন বকেয়া ছিল।
কারখানার মালিক ঈদের আগেই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মার্চের বেতন পরিশোধ করবেন বলে আশ্বাস দিলেও শ্রমিকরা তা পাননি। এতে ঈদের মধ্যে অর্থ সঙ্কটে দিন কাটিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
ক্রোনী গ্রুপের রফতানিমুখী এ পোশাক কারখানাটিতে কমপক্ষে সাত হাজার শ্রমিক কাজ করছেন বলে জানিয়েছে শিল্প পুলিশ।
এপ্রিলের ৮ তারিখ কারখানা বন্ধের সময় মোবাইলে বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিয়েও কথা রাখেনি মালিকপক্ষ। আট মাস ধরে বেতন নিয়ে এভাবে গড়িমসি করছে। বেতনের দাবিতে রাস্তায় না নামলে শ্রমিকরা বেতন পান না।‘ঈদের দিনও বার বার মোবাইল চেক করেছি। এই মনে হয় বেতন ঢুকলো এই আশায়। কিন্তু বেতন আসেনি। আপনারা ভাবতেও পারবেন না ঈদের সময় বেতন না পেলে কিভাবে শ্রমিকদের দিন কাটে। এবার ঈদে আনন্দ ছিল না। অর্ধেক বেতন দিলেও তো হতো।’ঈদের আগে বেতন না পাওয়াতে গ্রামে যেতে পারেননি বলে জানান কারখানার শ্রমিক । বলেন, ‘বাসের টিকেট কেটেও সিরাজগঞ্জে বাড়ি যেতে পারিনি।’তিনি বলেন, ‘আমাদের ক্রোনীর শ্রমিকদের ঈদ বা উৎসব নাই। প্রতি মাসে বেতনের জন্য রাস্তায় নামতে হয়। বাসের টিকেট কেটেও গ্রামের বাড়ি যেতে পারি নাই। টাকা নাই, বাড়ি গিয়ে কী করব? আমাদের ঈদের আনন্দ শেষ করে দিয়েছে ক্রোনীর মালিক।’ঘটনাস্থলে থাকা ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তছলিম উদ্দিন বলেন, ‘শ্রমিকরা মার্চের বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। তারা কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা করছেন না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘অবরোধের কারণে কমপক্ষে দুই কিলোমিটার যানজট দেখা দিয়েছে। শ্রমিকদের শান্ত রাখার চেষ্টা করছি। সমস্যা সমাধানে মালিকপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।’