সাজু হোসেন: ‘দেশের সবাইকে নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে, কিন্তু জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকতে পারেনা’ মন্তব্য করে বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও আওয়ামী লীগ নেতা সায়েম আহমেদ বলেছেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে জাতির জনকের যে অবদান তা কেউ অস্বীকার করতে পারবেনা। যদি কেউ তাকে অস্বীকার করে, তাহলে আমি বলবো সে দেশের স্বাধীনতাকেও বিশ্বাস করেনা।
রোববার (০৫ মার্চ) সকালে গণমাধ্যমের সাথে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে যেমন জাতির পিতা আছে, তেমনি প্রতিটি দেশেই তাদের জাতির পিতা রয়েছে। কোন দেশে জাতির পিতাকে নিয়ে কখনও কোন প্রশ্নই ওঠেনি। শুধু আমাদের দেশেই জাতির পিতাকে নিয়ে নানা প্রশ্ন তোলা হয়। আপনারা দেখবেন, আমাদের পাশ্ববর্তি দেশ ভারতের জাতির পিতা হলেন, মহাত্মা গান্ধী। তাকে বিরোধী দল থেকে শুরু করে দলমত নির্বিশেষে সকলে শ্রদ্ধা করে এবং জাতির পিতা হিসেবে মেনে নেয়। এক সময়ের বিরোধী দলের নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও তাকে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করে।
কিন্তু আমাদের দেশে আমরা কি দেখেছি? খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পর জাতির পিতাকে শ্রদ্ধাতো দূরের কথা তার নাম নিশানা চিরতরে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছেন। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদানের ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছিলো। শুধু তাই নয়, এই মহান নেতার মৃত্যুবার্ষিকীতে কেক কেটে নিজের ভূয়া জন্মদিন পালন করে জাতিকে বার বার লজ্জিত করছেন। এটা কোন সংস্কৃতি আমি জানিনা। তবে আমি বলবো, বঙ্গবন্ধু জন্ম হলে এদেশে ৬৬’র ৬ দফা, ৬৯ গণঅভ্যুত্থান ও ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধ রচিত হতো না। তিনি যদি ওই দিন ৭ মার্চের ভাষণ না দিতেন, যদি স্বাধীনতা ঘোষণা না করতেন, তাহলে এ জাতি কখনও স্বাধীন হতে পারতো না। যে মানুষটা দেশের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, এত ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাকে জাতির পিতা হিসেবে মেনে নিলে কি এমন ক্ষতি হয়। বরং আমিতো মনেকরি, বাঙালি হিসেবে এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তাই এই মহান নেতাকে দলমত থেকে শুরু করে সকল কিছুর ঊর্ধ্বে রাখা উচিত বলে আমি মনে করি।
তিনি আরও বলেন, আসলেই আমরা বেঈমান জাতি। যে ব্যক্তির বলিষ্ঠ নেতৃত্বে, ত্যাগে আমরা একটা দেশ পেলাম, সেই ব্যক্তিকেই পুরো পরিবার সহ নৃশংসভাবে হত্যা করলাম। বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, ওই কুলাঙ্গারদের কলঙ্কের বোঝা এই জাতিকেই বহন করে চলতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর বেশ কয়েকজন হত্যাকারিদের ফাঁসির মধ্যদিয়ে জাতির কঙ্কলের বোঝা কিছু হালকা করলেও বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ এখনও বন্ধ হয়নি। যতদিন না সকল কুলাঙ্গারের ফাঁসি না হবে, ততদিন এ রক্তক্ষরণ চলবেই।