বাংলাদেশের ইতিহাসে অতীতে কোনো সময় এত বেশি বৈষম্য ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের।তিনি বলেন, বৈষম্য তৈরি করার জন্য যদি নোবেল প্রাইজ থাকতো, তাহলে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার সেই নোবেল প্রাইজ পেত।আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে দলটির ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত মত বিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।জি এম কাদের বলেন, ‘আমি একটা দেশ পেলাম। আমার দেশ; প্রজারা বলবেন। আমিই চালাব, আমিই সরকার গঠন করব, আমিই সরকার পরিবর্তন করব। উদ্দেশ্য হলো আমার যে বৈষম্য; আমার ভাইয়ে-ভাইয়ে বৈষম্য করা, সেটার থেকে আমরা মুক্তি চাই।তিনি বলেন, ‘এখন দেখেন, সেই অর্জন-প্রজাদের সেই মালিকানা ছিনতাই হয়ে গেছে। মালিকানা তাদের হাতে নেই! এটা হলো বাস্তব কথা। এখন জনগণের কথায় যে চলবে, জনগণের কথায় যে সরকার পরিবর্তন হবে এ রকম কোনো বিষয় ঘটছে না। জনগণের কথা বলারই অধিকার নেই। বলতে গেলেই নানা ধরনের সমস্যা। কথা শোনারও কোনো দরকার নেই।বর্তমান সরকার একটা শক্তি-সামর্থ্য নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে এই দেশটাকে দখল করে ফেলেছে। এখন জনগণের কথা নয়—তাদের কথায় জনগণকে চলতে হবে এবং তাদের কথায় বৈষম্য বা যাই হোক সৃষ্টি হবে। সেখানে জনগণের কোনো কথা বলার অধিকার নেই,’ বলেন তিনি।কাদের বলেন, ‘এখন আমার কাছে মনে হয়, আমরা ছোটবেলায় রূপকথার গল্প পড়তাম, আরব্য রজনী। সেখানে বলা হতো, সিন্দাবাদকে একবার দৈত্য নদী পার হওয়ার কথা বলে—আমি পঙ্গু, আমাকে পাড় করে দেন। ঘাড়ের মধ্যে উঠেছে, আর তারপর ঘাড় থেকে নামে না। এখন বর্তমান সরকার সিন্দাবাদের সেই দৈত্য হয়ে জনগণের কাঁধে চেপেছে। এখন জনগণের কথায় সে চলবে না, জনগণকে তার কথায় চলতে বাধ্য করছে। এটি হলো আমাদের সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য।’নেতাকর্মীদের উদ্দেশে জাপা চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আমাদের বুঝতে হবে যে আমরা জনগণের পক্ষে থাকব না সুযোগ-সুবিধার পক্ষে থাকব। জনগণের পক্ষে থাকতে গেলে ত্যাগ স্বীকারের মানসিকতা থাকতে হবে এবং আমি সে রকম মনোভাব থাকা উচিত। যারা সুযোগ-সুবিধার লোভে পড়ছেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস এই সুযোগ-সুবিধা অত্যন্ত স্বল্প সময়ের জন্য। সামনের দিকে তাদের প্রয়োজনীয়তা থাকবে না।’তিনি বলেন, ‘যারা আওয়ামী লীগের বা সরকারি দলের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে অনেক দিন অনেক কিছু করেছেন, তাদেরকে কিন্তু দুই মিনিটে আবার লাথি দিয়ে ফেলেও দেওয়া হয়েছে।’যদি টিকতে হয় রাজনীতিতে, সঠিক রাজনীতিতে থাকতে হবে। জনগণের সঙ্গের রাজনীতিতে থাকতে হবে, যতই কঠিন হোক। সেখানেই আপনি টিকতে পারবেন। না টিকতে পারলে আপনি শেষ হয়ে যাবেন। আর যদি অন্যভাবে বেঁচে থাকতে চান সুযোগ-সুবিধা নিয়ে, সেখানেও আপনি রাজনীতিতে শেষ হয়ে যাবেন। দালাল হিসেবে বেঁচে থাকবেন, রাজনীতিবিদ হিসেবে বেঁচে থাকতে পারবেন না,’ যোগ করেন তিনি।