বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মইন খান বলেছেন, বিএনপি আন্দোলন করে এই দেশের ১৮ কোটি মানুষের ভোটের অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের জন্য। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিএনপি আন্দোলন করে না।
বুধবার বিকালে নারায়নগঞ্জের ফতুল্লার সাইনবোর্ড এলাকায় ক্ষমতাসীন সরকারের পদত্যাগ, সংসদের বিলুপ্তি ঘোষণা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ নানা দাবিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি আয়োজিত জন-সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মইন খান বলেন, আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করছি মানুষের ভোটের অধিকারের জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়। আজকে আওয়ামী লীগ এই দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংশ করে দিয়েছে বলেই এই দেশের মানুষ তাদের প্রত্যাখান করেছে। তারা যদি এত ভাল কাজ করে থাকে তাবে একটি সাষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে এত ভয় পায় কেন? তারা ভাল কাজ করে থাকলে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে পদত্যাগ করে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দিক। জনগণ যদি তাদের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করে তবে তারা আবারো ক্ষমতায় আসবে। আমি নিজে তাদের অভিনন্দন জানাবো।
তিনি বলেন, এ সরকার গণতন্ত্রকে হরণ করেছে। এ গণতন্ত্রকে আমাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। তাই আজ নারায়ণগঞ্জের মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছে। আপনাদের ফতুল্লা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু পুলিশের গুলিতে চোখ হারিয়েছেন। বিএনপির কত নেতাকর্মী জীবন দিয়েছেন। তাদের এই আত্মত্যাগ যেন বৃথা যেতে না পারে। একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা ও মানুষের গণতন্ত্র রক্ষা করা।
এ স্বৈরাচারী সরকার দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে দেশ চালাচ্ছে। তারা দাবি করে তারা নাকি স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। যে সরকার গণতন্ত্র হরণ করে আজ অলিখিত বাকশাক কায়েম করেছে সে সরকার কোনোদিন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হতে পারে না। এ সত্য আজ শুধু বাংলাদেশের ভেতরে নয়, বাংলাদেশের বাইরের মুক্তিকামী বিশ্বের প্রতিটি মানুষ এটি টের পেয়ে গেছে।
দ্রব্যমূল্যে মানুষের নাভিশ্বাস উল্লেখ করে তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে আজ মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। রিজার্ভ এত দ্রুত কেন কমল তার জবাব এ সরকারকে দিতে হবে। যারা সুশাসনে বিশ্বাস করে তারা এদের বিরুদ্ধে। রিজার্ভ খালি করে ওরা আইএমএফের কাছে যেতে বাধ্য হয়েছে। অর্থনীতিকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। এর জন্য সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশের মানুষ।
মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা বলতাম পাকিস্তান ২২টি ধনী পরিবার সৃষ্টি করেছে। আমরা এর প্রতিবাদ করেছিলাম। এ সালামরা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিল গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক অধিকার রক্ষা করার জন্য। আওয়ামী লীগ একই কায়দায় কতগুলো পরিবার সৃষ্টি করেছে যারা মানুষের সম্পদ বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে।
আওয়ামী লীগ বলে বিএনপি জন্ম নাকি ক্যাটনমেন্টে। আমরা বলতে চাই বিএনপির জন্ম ক্যান্টনমেন্টে হয়নি, আওয়ামী লীগের জন্ম তো ক্যান্টনমেন্টে হয়নি। সে ব্যাপারে আমি কথা বলব না বললে তারা লজ্জা পাবে। আওয়ামী লীগের জন্ম তো গণতান্ত্রিকভাবে হয়েছিল। কেন তারা স্বাধীনতার দুই তিন বছরের মাথায় বাকশাল কায়েম করেছিল। বিএনপি গণতন্ত্র হরণ করেনি, উল্টো শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
ডাক্তাররা বলেছে বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে হবে। সরকার মানবাধিকার ক্ষুন্ন করে তাকে আটকে রেখেছে। এর জবাব আওয়ামী লীগকে দিতে হবে।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, ঢাকা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু ও আজহারুল ইসলাম মান্নান।