ঠাকুরগাঁওয়ে ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমির খেলা ছিল। সেই খেলা দেখতে যাওয়ার জন্য পরিবারের কাছে ২০০ টাকা চেয়েছিল লোকমান (১২)। কিন্তু তাকে কেউ টাকা দেয়নি। ফলে অভিমানে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে লোকমান।এ কথা জানতে পেরে সেই কিশোরকে দেখতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এসময় লোকমানের খেলাধুলা ও পড়াশোনার খরচের দায়িত্ব নেন তিনি। রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে ওই কিশোরের দাদির হাতে নগদ ১০ হাজার টাকা তুলে দেনসুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী। এর আগে বিকেলে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল ডিগ্রী কলেজ মাঠে মুখোমুখি হয় ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমি ও রানীশংকৈলের সোহেল রানা ফুটবল একাডেমি। ওই খেলা দেখতে না পারায় বিষপান করে লোকমান।লোকমান উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের রত্নাই বারসা গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে। এদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার সঞ্জিব কুমার রায় জানিয়েছেন, বর্তমানে লোকমানের শারীরিক অবস্থা ভালো আছে।ব্যারিস্টার সুমন সাংবাদিকদের বলেন, লোকমানের চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা দিয়েছি। পরবর্তীতে তার পড়াশোনা ও খেলাধুলার খরচ আমাদের একাডেমি বহন করবে। এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে সুমন বলেন, আসলে এই বয়সে ছেলেমেয়েরা একটু অভিমানী হয়। কিন্ত বিষয়টিতে আমার খুব খারাপ লেগেছে। এটা তার পরিবারেরও দোষ না। কারণ তার পরিবার দরিদ্র, তাই টাকা দিতে পারেনি। আমরা যদি সুস্থ ধারার কাজ করে সমাজটাকে গড়তে পারি ও ভালো কাজ করি তাহলে অবশ্যই মানুষের সারা পাওয়া যাবে।ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের প্রশংসা করে তিনি বলেন, আমি অনেক জেলা ঘুরে বেড়িয়েছি, কিন্তু ঠাকুরগাঁওয়ের মতো এত ভালো মানুষ কোথাও দেখিনি। এখান থেকে যাওয়ার আগে আর একটি কথা বলতে চাই, ঠাকুরগাঁওয়ের বিমানবন্দরটি এখন শুধু আমার কাছে ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের দাবি নয়। আমার কাছে মনে হয়েছি এটি যৌক্তিক দাবি। আমি যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন এই বিমানবন্দরের জন্য আন্দোলন করে যাবো।‘কারণ ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষকে আমি আত্মীয় মনে করি। আত্মীয় মানে সুখে দুঃখে পাশে থাকা। যেভাবে সিলেটে বন্যার সময় ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছিল, তেমনি এখানকার মানুষ কোনো বিপদে পড়লে আমরা সিলেটবাসীও আপনাদের পাশে দাঁড়াবো। আর আপনারা ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ যে ভালোবাসা দেখিয়েছেন তার জন্য কৃতজ্ঞ।’