ভারতে গণপিটুনির সর্বোচ্চ সাজা হতে যাচ্ছে মৃত্যুদণ্ড
ভারতের লোকসভায় বুধবার (২০ ডিসেম্বর) তিনটি আইনের সংশোধনী পাস হয়েছে। সংশোধনীগুলো হলো ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ২০২৩’, ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা ২০২৩’ ও ‘ভারতীয় সাক্ষ্য ২০২৩’। এর ফলে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড চালু হতে চলেছে।
ভারতে সম্প্রতি গণপিটুনিতে অনেক মানুষ মারা গেছেন। গরুপাচারকারী বা ছেলেধরা সন্দেহে অনেক জায়গায় গণপিটুনিতে অনেক মৃত্যু হয়েছে। কেন্দ্র সরকার আশ্বাস দিয়েছিল, এর বিরুদ্ধে কড়া আইন করা হবে।
আইনে এবার সেই সংশোধনী আনা হয়েছে। বলা হয়েছে, আইন যাতে কেউ নিজের হাতে তুলে নিতে না পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিলগুলো ধ্বনিভোটে পাস হয়েছে। রাজ্যসভায় পাস হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পেলেই তা আইনে পরিণত হবে।
এই বিলগুলো নিয়ে আলোচনার সময় ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহ আইন বাতিল করা হবে। এই আইনে ইংরেজরা মহাত্মা গান্ধী, সর্দার প্যাটেলদের বন্দি করেছিল। এখন আর ভারতে এই আইনের দরকার নেই। তবে কেউ দেশের বিরুদ্ধে কাজ করলে তার বিচার হবে বর্তমান আইনে। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ শাস্তিযোগ্যই থাকবে।
এই দেশদ্রোহ আইনের প্রয়োগ নিয়েও সাম্প্রতিককালে প্রচুর বিতর্ক হয়েছে। তখন এটাও বলা হয়েছিল, ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুসারেই এর বিচার হতে পারে। এর জন্য আলাদা দেশদ্রোহ আইনের প্রয়োজন হয় না।
তবে বিরোধীদের ছাড়াই লোকসভায় এসব বিল পাশ হয়ে যাওয়ায় বেশ চটেছেন তারা। জানা গেছে, বিলগুলোকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য তারা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন।
বুধবার লোকসভার অধিবেশন শেষে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের বাড়িতে বৈঠকে বসেন বিরোধীদলীয় নেতারা। সেখানে তারা ফৌজদারী আইন সংক্রান্ত নতুন তিন বিলকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা নিয়ে আলোচনা করেন।
বৈঠক শেষে তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য সৌগত রায় জানিয়েছেন, তারা নতুন বিলগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, প্রস্তাবিত আইনে যেসব ত্রুটি রয়েছে, সেগুলোকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হবে। বিরোধী সদস্যরা না থাকার সুযোগে ক্ষমতাসীনরা এ বিলগুলো পাস করিয়ে নিয়েছে বলেও দাবি তার।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে