‘বিএনপি কোন রাজনৈতিক দল না, এটা একটি মাফিয়া সিন্ডিকেট অর্গানাইজেশন’ উল্লেখ করে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের পুত্র ইমতিনান ওসমান অয়ন (অয়ন ওসমান) বলেছেন, ২০১৩ তে ওরা (বিএনপি) সরকার পতন করার চেষ্টা করেছিলো একই কৌশলে। তখন ওরা আরও সংখ্যায় বেশি ছিলো। পেরেছে সরকার পতন করতে? সম্ভব হবেনা। এখনও পারবে না। কেননা, ওদের নেতৃত্ব নাই। যে লন্ডনে বসে নেতৃত্ব দেয়, সেটা রাজনৈতিক দল না। এটা একটা মাফিয়া সিন্ডিকেট অর্গানাইজেশন। এটা আসলেই রাজনৈতিক দল না। যদি সঠিক নেতৃত্ব থাকতো, তাহলে বুঝতাম। নেতৃত্বই নাই। নেতৃত্বহীন দল একটা সরকার পতনের সক্ষমতা কখনই রাখেনা, ভবিষ্যতেও রাখবে না।
সোমবার (০৬ নভেম্বর) দুপুরে শহরের চাষাঢ়াস্থ রূপয়ন টাওয়ারের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে খোলামেলা আলোচনা করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
অয়ন ওসমান বলেন, বাংলাদেশ আধুনিক হয়েছে। আমরা ছোট বেলায় যেটা দেখে বড় হয়েছি, যে ৮৮ তে ৯৬ তে যে ধরনের আন্দোলন হয়েছিলো, ওই সময়টাও নাই, ওই সুগোটাও নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশটা এগিয়ে নিয়ে শুরু করেছে। রাস্তা-ঘাট হয়েছে। মানুষের ভোগান্তিতা কমেছে। ওনি (প্রধানমন্ত্রী) ভোগান্তিতা কমাতে চেষ্টা করেছেন। এখন যারা আসছেন। বিরোধী দল হিসেবে নিজেদেরকে আবার নতুন করে পরিচিতি দেয়ার চেষ্টা করছেন। বিগত দশ বছরে কিন্তু তারা রাজপথে ছিলো না। রাজপথ ত্যাগ করেছে অনেক আগেই। যদি জনগণের স্বার্থে রাজনীতি করে, তাহলে এতদিন তারা রাজপথে ছিলো না কেন? হঠাৎ নির্বাচনের আগেই কেন আবার জেগে উঠলো? এটা হচ্ছে আমার প্রথম প্রশ্ন। আর দ্বিতীয় প্রশ্ন, একটা দল যদি বলে আমি জনগণের জন্য করছি। তাহলে জনদূর্ভোগ তৈরি করছে কেন? বাসে আগুন দিচ্ছে কেন? যদি সরকারের সাথে সমস্যা থাকে তাহলে সরকার বিরোধী আন্দোলন হবে। জনগণ, সাধারণ মানুষ কেন ভোগান্তির মুখমুখি হচ্ছে?
তিনি বলেন, আপনারা দেখছেন বিগত একমাস ধরে বাংলাদেশের কত কোটি কোটি টাকা নষ্ট করা হয়েছে, ধ্বংস করা হয়েছে। বাস জ্বালানো হচ্ছে, মানুষ মারা হচ্ছে, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে এ যুগে এসে। ওরা যে বলছে বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরোদ্ধার করবে। এখন বর্হিবিশ্বের কি অবস্থা, আপনারাইতো দেখছেন। গাজা-ফিলিস্তিন দেখেন, রাশিয়া-ইউক্রেন দেখেন। পৃথিবীতে যত আধুনিক দেশ আছে সব কিন্তু এখন যুদ্ধের মুখে। সমাধান মিলছে? মিলছে না। ওই হিসেবে কিন্তু আমরা ভালো আছি। আমাদের এখন একটিই পাওনা, দ্রব্যমূল্য। দ্রব্যমূল্যটা একটু বেশি আছে। এছাড়া কিন্তু বাংলাদেশের যে কয়টা সংকট ছিলো, সবই কিন্তু আমরা সমাধান করতে পেরেছি। জ্বালানি থেকে শুরু করে অনেক কিছুই আমরা সমাধানে আনতে সক্ষম হয়েছি।
এখন যেটা সরকার চেয়েছে, আর কিছুটা সময়। কোভিট গেছে। কোভিটে কিন্তু সারাবিশেই একটা আর্থিক সংকট তৈরি হয়েছিলো। ওটাকে এখন সরকার সমাধান করে নিয়ে আসবে। এটাই যাতে সমাধান করতে না পারে এটাই তাদের মূল লক্ষ্য।
বিএনপির চলমান হরতাল-অবরোধ প্রসঙ্গে অয়ন ওসমান আরও বলেন, তাদের (বিএনপি) লক্ষটা কি? ক্ষমতায় আসা, আর কিছু না। যদি জনগণের কথা চিন্তা করে তারা রাজনীতি করতো, তাহলে তারা জ্বালাও পোড়াও করতো না। তাহলে তারা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতো। মানুষের কাছে যেতো, গণসংযোগ করতো। জেলায় জেলায় কাজ করতো, ঢাকা শহরকে অবরোধ করে রাখতো না। এই যে একটা বছর ধরে পল্টন যে এলাকাটা, এখানে কিছুদিন আগে একটা পরিসংক্ষা হয়েছে। এখানে কত কোটি টাকা নষ্ট হয়েছে, কত কোটি টাকা ব্যবাসায়ী ক্ষতি হয়েছে, আপনারা জানেন। আমার নিজেরই পরিচিত ১০-১২ জন মানুষ আছে, এরা যখন আমাকে প্রশ্ন করে আমি উত্তর দিতে পারিনা। আমরা টেক্স দেই, সরকার আমাদের কাছ থেকে কর আদায় করে প্রতিবছর। কিন্তু আমরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিভাবে চালাবো। এটা কি গণতন্ত্রের উপর কোন চাপ ফেলছে না? মানুষের মৌলিক অধিকারের উপর কোন চাপ ফেলছে না? ওইটাই হয়েগেছে ঘটনা।
এরা যদি রাজনীতি করতে চায়, রাজনীতি করুক। যেভাবে আওয়ামী লীগ করছে, সেভাবে করুক। সেটা হচ্ছে জনগণের সাথে থেকে। জনগণকে পাশে রেখে। গাড়ী পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করে এদেশে কেউ ভবিষ্যত গড়তে পারেনি, সামনেও পারবে না।
বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনে আসুন। আপনারা নির্বাচনে আসেন, জনগণের আস্থা নিয়ে। জনবিচ্ছিন্ন কইরেন না নিজেদের। যদি নিজেদের বিরোধী দল হিসেবে দেখতে চান, যদি প্রকৃতি বিরোধী দলের দায়িত্ব পালন করতে চান, তাহলে জনগণের জন্য মাঠে নামুন। না হলে, এটা রাজনৈতিক পরিচয় হতে পারেনা। ভবিষ্যত প্রজন্মকে আপনারা নষ্ট করে ফেলছেন। যারা ভবিষ্যতে দেশ গড়বে, তারা কি শিখবে আপনাদের কাছ থেকে? তারা কি শিখবে বিরোধী দল মানেই কি জ্বালাও পোড়াও করা? নাকি সরকারের ভুলটা সরকারকে ধরিয়ে দেওয়া। এখন এটাই হয়ে গেছে বড় প্রশ্ন।