পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে দায়ের করা ছয় মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।
অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন—শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি এবং তার মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিক।
এছাড়াও গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউকের কয়েকজন বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা রয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার স্পেশাল জজ আদালত-৫ এর বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন তিনটি মামলায় সংক্ষিপ্ত শুনানির পর অভিযোগ গঠন করেন।
তবে অভিযুক্তরা আদালতে অনুপস্থিত থাকায় বিচারক তাদের সামনে অভিযোগ পড়ে শোনাতে পারেননি।
আদালত আগামী ১১ আগস্ট মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরুর তারিখ নির্ধারণ করেছেন।
অন্যদিকে একই অভিযোগে দায়ের করা অন্য তিন মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম অভিযোগ গঠন করেন।
এর আগে গত ১ জুলাই আদালত সরকারকে ছয়টি গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করে হাসিনা ও রেহানাসহ ২৮ জনকে একই মামলায় আজ আদালতে হাজির হওয়ার জন্য তলব করে।
আদালত সূত্র জানায়, মামলায় পূর্বে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে পুলিশ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরে এই আদেশ দেওয়া হয়।
গত ১০, ১৩ ও ১৫ এপ্রিল শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, জয়, সায়মা, টিউলিপ, আজমিনা ও রাদওয়ানসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলার অভিযোগ আমলে নিয়ে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২৫ মার্চ ছয়টি মামলায় শেখ হাসিনা ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। সবগুলো মামলাতেই শেখ হাসিনা আসামি।
দুদক সব আসামিকে পলাতক হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
গত ১২ জানুয়ারি ঢাকার সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো দায়ের করা হয়।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, প্রধান আসামি সায়মা ওয়াজেদ তার ও পরিবারের সদস্যদের নামে রাজউক এলাকায় থাকা ফ্ল্যাট বা বাড়ির মালিকানার তথ্য গোপন করেছেন। তিনি দ্বিতীয় আসামি শেখ হাসিনার সরকারি ক্ষমতা অপব্যবহার করে জমি বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় জড়িত ১৪ জন সরকারি কর্মকর্তাকে প্রভাবিত ও যোগসাজশের মাধ্যমে পূর্বাচল প্রকল্পে একটি প্লট নিজের নামে বরাদ্দ নেন। তবে তিনি সেই বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য ছিলেন না।
দুদকের নথি অনুসারে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজউকের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সহায়তায় নিজে, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ, বোন শেখ রেহানা, ভাগ্নে রাদওয়ান মুজিব এবং ভাগ্নি আজমিনা সিদ্দিকের নামে মোট ছয়টি প্লট বরাদ্দ নেন, যা বর্তমান বিধিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
এই প্লটগুলো পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পের কূটনৈতিক জোনের সেক্টর-২৭ এ অবস্থিত।
এর আগে, গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পসহ নয়টি প্রকল্প থেকে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মোট ৮০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের তদন্ত শুরু করে দুদক।
২২ ডিসেম্বর ২০২৪, হাসিনা ও জয়-এর বিরুদ্ধে ৩০ কোটি মার্কিন ডলার বিদেশে পাচারের অভিযোগে পৃথক তদন্ত শুরু করে কমিশন।
সূত্র : ডেইলি স্টার