নিজস্ব সংবাদদাতা // নীতিমালার তোয়াক্কা না করে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের জামপুর ইউনিয়নের তালতলা ব্রাক্ষনভাগা এলাকায় “এনবিএল” ইটভাটার মালিক কামরুজ্জামান কামরান ভুইয়া ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় নিচ্ছেন। এতে করে জমির টপ সয়েল ইটভাটায় যাওয়ায় জমি হারাচ্ছে উর্বরতা।
স্থানীয়রা বলছেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ইটভাটা হওয়ায় স্থানীয়রা নানামুখী সমস্যায় পড়ছেন প্রতিনিয়তই। এছাড়াও ফসজি জমি কাটার ফলে একদিকে স্থানীয় কৃষকরা ভালো ফসল ফলানো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে ইটভাটার কালো ধোয়ায় পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে। নানান রোগব্যাধীর শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, প্রকাশে দিবালোকে কৃষকের ফসলিজমি কেটে পুকুর করে ফেলেছে ওই অবৈধ ইটভাটার মালিক। ইটভাটার কালো ধোয়ায় পরিবেশ বিপন্ন করে তোলেছে। এলাকারবাসীরা ক্ষোভের আগুনে পুড়লেও অদৃশ্য শক্তির ইশারায় ইটভাটার মালিককে কিছুই করতে পারছে না প্রশাসন। স্থানীয় কৃষকদের জমির মাটি কেটে সাবার করে ফেলছেন তারা। ইটভাটার মালিক নিজেই দাড়িয়ে থেকে কৃষি জমির মাটি কাটছেন তারা।
বস্তল এলাকার আলীনূর রহমান এই প্রতিবেদকে জানান, ঘনবসতিপূর্ণ ইটভাটা তৈরী করে কামরুজ্জামান কামরান ভুইয়া গেল কয়েক বছর যাবৎ এখানকার মানুষের সমস্যা করেই যাচ্ছে। এলাকাবাসী বারবার তাকে সমস্যার কথা জানালেও সে কোনভাবেই তা কর্নপাত করেন না। ঘনবসতিপূর্ন ইটভাটা হওয়ার বয়স্ক ও বাচ্চারা বেশি সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছেন। ইটভাটার কালো ধোয়ার কারনে সর্দি, কাশি, ঠান্ডা থেকে শুরু করে নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বয়স্ক ও শিশুরা। এভাবে চলতে থাকলে এক অবৈধ ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান কামরান ভুইয়ার কারণে কোবাগা গ্রামের মানুষ স্বাস্থ্য ঝুকিতে পরবে। ঘনবসতি এলাকা থেকে ইটভাটা সরানোর দাবি জানান তিনি।
খোরশেদ নামে ওই গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, ইটভাটার কালো ধোয়ার কারণে পরিবেশ শেষ হয়ে যাচ্ছে। খ্যাতের ফলন করা যাচ্ছে না। ফসলি জমি করতে গিয়েও লাভ হয় না। আমরা বারবার নিষেধ করলেও কামরান ভুইয়া ধনি ব্যক্তি হওয়ায় তাকে কিছুই করতে পারে না কেউ। তাই সরকারের সবোচ্চ মহলের কাছে আমাদের দাবি দ্রæত এই ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে এলাকাবাসী উপকৃত হবে।
আব্দুল মালেক নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ইটভাটার মালিক পয়শাওয়ালা হওয়ায় যারা আসে জেল জরিমানা করতে তাদের টাকা দিয়ে সে কিনে ফেলে তাই তারা চলে যায়। আর আমরা বছরকে বছর সমস্যায় পড়ে থাকি। কেউ দেখার নেই। শুধু আশ^াস দেয় কেই কাজ করে না। অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরেই এই এলাকার আলো বাতাস দূষন করছেন কামরান ভুইয়া।
আওলাদ নামে স্থানীয় এক জানান, আমরা অসহায় ইটভাটার মালিকের কাছে। তাই দীর্ঘদিন ধরে ধুলোবালির সাথেই বসবাস করছি। বাসায় বৃদ্ধ মা আর কোমলমতি সন্তানদের নিয়ে খুব কষ্টে আছি। মাসের অধিকাংশ সময়ই হসপাতালে কাটাতে হয় তাদের নিয়ে । তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমরা দ্রæত পরিবেশ দূষণকারী এই অবৈধ ইটভাটা থেকে মুক্তি চাই।
সোনারগাঁ সহকারী কর্মকর্তা মো: ইব্রাহিম বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অবৈধ মাটিকাটা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক শেখ মোজাহিদ জানান, অবৈধ ইটভাটার গুলোর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক জানান, কৃষকদের ফসলি জমির মাটি যারা কেটে নিচ্ছে তাদেরকে কোনভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে খুব শিগ্রই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।