প্রায় ৪ দশক পর এই প্রথম নারায়ণগঞ্জে খোলা মাঠে জনসভা করতে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে শহরের ইসদাইর ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে জনসভা হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের।
এরই মধ্যে জনসভাকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জে জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে সাজ সাজ রব। জেলা ও মহানগর জামায়াতের প্রত্যেকটি স্তরেই একাধিক প্রস্তুতি সভা করেছেন। তাদের টার্গেট হচ্ছে জনসভা প্রায় লক্ষাধিক লোকের সমাগম করা। এর মধ্যদিয়ে নারায়ণগঞ্জে জামায়াতের অবস্থান জানান দিতে চাচ্ছেন তারা।
দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৮৪ সালে ঢাকা থেকে আলাদা হওয়ার পর নারায়ণগঞ্জে এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে খোলা মাঠে জনসমাবেশ করা হয়নি জামায়াতের। কয়েকবার খোলা মাঠে করার উদ্যোগ নিয়ে নানা প্রতিবন্ধকতায় শেষ পর্যন্ত হয়নি। ২০০২ সালে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে কর্মীসভায় তৎকালীন জামায়াতের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এলেও প্রকাশ্যে কোনো সভা করার সুযোগ হয়নি।
এর আগে জামায়াতের তৎকালীন আমির অধ্যাপক গোলাম আজম নারায়ণগঞ্জে যাওয়ার কথা থাকলেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন শামীম ওসমান। সেই সঙ্গে তখন নারায়ণগঞ্জে গোলাম আজম, দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ও আলী আহসান মুজাহিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে সাইনবোর্ডও স্থাপন করা হয়েছিল।
তাই এবার নারায়ণগঞ্জ জামায়াত থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জনসভাকে কেন্দ্র করে সেই সাইনবোর্ড থেকে বর্তমান জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানকে সম্মান জানিয়ে গাড়ি বহরে করে স্লোগান দিতে দিতে শহরে প্রবেশ করবেন।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াত ইসলামের আমির আব্দুল জব্বা গণমাধ্যমকে বলেন, দীর্ঘদিন পর বড় ধরনের একটি সভা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১৬ বছরে আমরা আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম-নির্যাতনে নিষ্পেষিত হয়েছি। এবার সমাবেশের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জবাসীকে জানান দিতে চাই, নারায়ণগঞ্জ নিয়ে আমাদের আগামী দিনের ভাবনা।
প্রস্তুতি সম্পর্কে তিনি বলেন, সমাবেশ উপলক্ষ্যে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে, থানায় থানায় কাজ করছি। বিভিন্ন মাধ্যমে দাওয়াত পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি। রাজনৈতিক অন্যান্য নেতাদের দাওয়ার দেওয়ার চেষ্টা করবো। ঝুঁকি বলতে কোনো কিছু ফিল করছি না।
উপস্থিতি সম্পর্কে আব্দুল জব্বার বলেন, আমাদের টার্গেট হচ্ছে লক্ষাধিক। সমাবেশকে সুন্দর সুশৃঙ্খল করার জন্য হাজার দুয়েক স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবেন। সেই সঙ্গে যারা সমাবেশে আসবেন, তাদের জন্য সব রকমের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, জামায়াত অন্যতম একটি বড় রাজনৈতিক দল। তারা জনসমাবেশ করবে। সেই সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। সাদা পোশাকেও থাকবে পুলিশ। জনসমাবেশ যেন শান্তিপূর্ণভাবে হয় সে লক্ষ্যে পুলিশ সদস্যরা কাজ করবেন।