শুরুতেই তানজিদ তামিম এবং লিটন দাস যেভাবে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছিলেন, তাতে সিরিজের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের খুব বাজে অবস্থা হতে যাচ্ছে, এমনটাই ধরে নিয়েছিলো সবাই; কিন্তু সৌম্য সরকার এবং মেহেদী হাসান মিরাজ সেই ধারণা বদলে দিলেন। অসাধারণ এক জুটি গড়ে বাংলাদেশকে বড় স্কোরের পথে নিয়ে যান তারা। এরপর তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং জাকের আলী অনিক।
চারটি বড় ফিফটির ওপর ভর করে সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩২২ রানের বিশাল লক্ষ্য দিয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজের দল। প্রথম দুই ম্যাচ হারের কারণে সিরিজের এই শেষ ম্যাচটি হয়ে দাঁড়িয়েছে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর মিশনে। বাংলাদেশ দলের বোলাররা কি পারবেন ৩২১ রানের পুঁজিকে ধারণ করে দেশকে জয় উপহার দিতে?
মূলত মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং জাকের আলী অনিকের ১৫০ রানের জুটিই এত বড় স্কোর করতে সহায়তা করে বাংলাদেশকে। প্রথম ম্যাচের মতোই ১০০ প্লাস জুটি গড়লেন এ দু‘জন। আর সিরিজের তিন ম্যাচেই অসাধারণ তিনটি হাফ সেঞ্চুরি উপহার দিলেন দলের সবচেয়ে প্রবীন ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
আজ খেললেন তিনি অপরাজিত ৮৪ রানের অনবদ্য এক ইনিংস। এ নিয়ে টানা চার ম্যাচ হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস খেললেন রিয়াদ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের আগে, আফগানিস্তান সিরিজের শেষ ম্যাচে খেলেছিলেন ৯৮ রানের ইনিংস।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে অবশ্যই জাকের আলী অনিকের কথা বলতে হবে। হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস একটি খেললেও, প্রথম ম্যাচে করেছিলেন ৪৮ রান। যা বাংলাদেশকে বড় স্কোর গড়তে সহায়তা করেছিলো।
টস হেরে ব্যাট করতে নামার পর ৯ রানে ছিল না ২ উইকেট। সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর মিশনে যাচ্ছেতাই শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের। টস জিতে বাংলাদেশকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক শাই হোপ। আলজারি জোসেফের প্রথম ওভারেই ক্যাচ দিয়েছিলেন সৌম্য সরকার। ব্রান্ডন কিং স্লিপে সহজ ক্যাচ ফেলে দেন। শূন্য রানে জীবন পান সৌম্য।
তবে আলজেরি জোসেফের পরের ওভারে পুল করতে গিয়ে বল সোজা আকাশে তুলে দেন তানজিদ হাসান তামিম। ৫ বলে শূন্য করেই সাজঘরে ফেরেন এই ওপেনার।
এক বল পর লিটন দাসও উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন, অনেক বাইরে বলে শট খেলতে গিয়ে এজ হয়ে স্লিপে ধরা পড়েন ২ বলে ০ করে। ৯ রানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে সৌম্য সরকার আর মেহেদী হাসান মিরাজের জুটিতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় টাইগাররা।
তবে সেট ব্যাটার দুজনই সত্তরের ঘরে এসে আটকা পড়েন। ১৩৬ রানের জুটি ভাঙেন গুদাকেশ মোতি। ৬ চার আর ৪ ছক্কায় বল সমান ৭৩ রান করে মোতির বলে এলবিডব্লিউ হন সৌম্য। মিরাজ ৭৩ বলে ৮ চার আর ২ ছক্কায় ৭৭ করে হন রানআউটের শিকার।
এরপর আফিফ হোসেন ২৯ বলে ১৫ করে রাদারফোর্ডকে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন। ২৬ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ফের চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
কিন্তু সেই চাপ সামলে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর জাকের আলী অনিকের ব্যাটে। ১৭১ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর আর কোনো উইকেটই হারাতে হয়নি টাইগারদের। ৬৩ বল খেলে ৮৪ রান করে অপরাজিত থাকেন রিয়াদ। ৭টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৪টি ছক্কার মারও মারেন তিনি। জাকের আলী অনিক ৫৭ বলে করেন ৬২ রান। ৫টি বাউন্ডারির সঙ্গে ২টি ছক্কার মার মারেন তিনি।