সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বাইরের যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ক্যাম্পাসের সাতটি প্রবেশপথে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়। বিষয়টি আগে থেকে না জানার কারণে অনেক মানুষ যানজটে আটকা পড়ে ভোগান্তিতে পড়েন।
ফলো করুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ মুখে তল্লাশি চৌকি বসিয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি আটকে দেওয়ায় শাহবাগের দিকে যেতে এভাবে যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ মুখে তল্লাশি চৌকি বসিয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি আটকে দেওয়ায় শাহবাগের দিকে যেতে এভাবে যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায়ছবি: তানভীর আহাম্মেদ
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বাইরের যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ক্যাম্পাসের সাতটি প্রবেশপথে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়। বিষয়টি আগে থেকে না জানার কারণে অনেক মানুষ যানজটে আটকা পড়ে ভোগান্তিতে পড়েন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বিকেল থেকে শাহবাগ, নীলক্ষেত, দোয়েল চত্বরসহ ক্যাম্পাসের সাতটি প্রবেশপথে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে যান নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ফলে শাহবাগ, নীলক্ষেত, বাংলামোটর, মৎস্য ভবন, আজিমপুর, চানখাঁরপুল, বকশি বাজার ও মিরপুর সড়কে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। ছুটির দিনে ক্যাম্পাস এলাকায় ঘুরতে গিয়ে অনেকে যেমন যানজটে আটকা পড়েন। আবার ওই এলাকায় কাজে গিয়েও অনেককে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। গতকাল রাত নয়টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে যানজট দেখা গেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার দেওয়ান জালাল উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল শুক্রবার ক্যাম্পাসের প্রবেশমুখগুলোতে নিরাপত্তা ও তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে। বহিরাগত যানবাহন ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
তবে ভুক্তভোগীদের অনেকে প্রথম আলোকে বলেছেন, যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের এমন সিদ্ধান্তের কথা তাঁরা জানতেন না। যানজটের ভোগান্তিতে অসন্তোষ জানিয়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ‘ডেলিভারিম্যান’ রেজাউল করিম গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, তিনি একটি পণ্য নীলক্ষেতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের আবাসিক এলাকায় পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ পথ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত তাঁর জানা ছিল না। সে কারণে তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে দীর্ঘ সময় নীলক্ষেত মোড় এলাকায় আটকে ছিলেন। তিনি বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত কার্যকর করার আগে ভালোভাবে প্রচার করা উচিত। তাহলে মানুষ ভোগান্তিতে পড়বে না।
ক্যাম্পাসের পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য শিক্ষার্থীদের চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার বাইরের যানবাহন চলাচল সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ। তিনি গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ক্যাম্পাসের সাতটি প্রবেশপথে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। যান চলাচল সীমিত রাখার সময় বকশীবাজার থেকে জগন্নাথ হল ক্রসিং হয়ে পলাশী দিয়ে বের হওয়ার রাস্তাটি খোলা থাকছে। এ ছাড়া জরুরি পরিবহন, রোগী, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অতিথির গাড়ি বা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো দাপ্তরিক কাজে এলে
ক্যাম্পাসে ঢোকা যাবে। পায়ে হেঁটে ক্যাম্পাসে ঢুকতে বাধা নেই।
প্রক্টর জানান, যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার আগের দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসসংলগ্ন পলাশী মোড়ে নিরাপত্তা ও নজরদারি বক্স উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান। সেখানে তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা বলেছিলেন।
কিন্তু বিষয়টি আগে থেকে ভালোভাবে প্রচার না হওয়ায় মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন। এ সম্পর্কে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, বৃহস্পতিবার পলাশীতে নিরাপত্তা বক্স উদ্বোধনের সময় উপাচার্য সাংবাদিকদের বিষয়টি জানিয়েছিলেন। কিন্তু অনেকের কাছে তথ্যটি হয়তো পৌঁছেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের মাধ্যমে শিগগিরই বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে আরও বড় পরিসরে বিষয়টি প্রচারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের দিক থেকে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানানো হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি রাইহান উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ছুটির দিনে বাইরের প্রচুর লোকজন ও যানবাহন ক্যাম্পাসে আসে। এতে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হয়। এটা নিয়ন্ত্রণের জন্য শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অনেক দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানানো হচ্ছিল। তবে আগে থেকে ঘোষণা না দিয়ে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করায় প্রথম দিন যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার ভিত্তিতে এগোনো হলে মানুষকে এমন যানজটে পড়তে হবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।