১০ ডিসেম্বর শনিবার রাজধানি ঢাকায় বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জে নেতা-কর্মীদের কোন ধরণের তৎপরতা না থাকলেও আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে জেলা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও নৌ পুলিশের নানা তৎপরতা চলছে। বুধবার থেকে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ চারটি পয়েন্ট সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক, বন্দরের মদনপুর এবং সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর ও মেঘনা টোল প্লাজায় পুলিশের চারটি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ শহর, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড, রূপগঞ্জ ভুলতা-গুলিস্তান রোড ও পুরাতন পাগলা সড়কের মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে চেক পোস্ট। এসব জায়গায় যাত্রীবাহি বাস থেকে শুরু করে সকল প্রকাশ যানবাহবেন চালানো হচ্ছে তল্লাশি।
অপরদিকে নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা মেঘনাসহ বিভিন্ন নদীতে বিশেষ নিরাপত্তা টহল শুরু করেছে নৌ পুলিশ। শুক্রবার সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জ থেকে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী ৫টি রুটের ৫০টি লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
সরেজমিনে শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) দেখা গেছে, শহর একেবারেই ফাঁকা। সড়ক মহাসড়কগুলোতেও গণপরিবহনের সংখ্যা অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক কম চলাচল করছে। বন্ধ রয়েছে অনেক বাসের কাউন্টার।
নাশকতার আশংকায় পুলিশের চেকপোস্টে ঢাকামুখী ছোট বড় সব ধরণের যানবাহন ও গণ পরিবহনে যাত্রীদের তল্লাশি করা হচ্ছে। প্রতিটি যাত্রীকে কোথায় যাবেন, কেন যাবেন এবং ঢাকা প্রবেশের সঙ্গত কারণ জিজ্ঞাসা করছেন তারা।
যাত্রীদের শরীরজুড়ে তল্লাশি করছেন পুলিশ সদস্যরা। সঙ্গে থাকা মোবাইলও চেক করছেন তারা। যাদের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হচ্ছে অথবা যাদের মোবাইলে বিএনপি কিংবা সরকারিবিরোধী কোনো বিষয় পাওয়া যাচ্ছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সন্তোষজনক উত্তর পেলেই তাদের ঢাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। কেউ কোন বিস্ফোরক দ্রব্য বহন করছে কিনা সে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে জেলার আইন শৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনী। অপরদিকে শীতলক্ষ্যা নদীর কাঁচপুর, বন্দর ঘাট, নবীগঞ্জ ঘাট এলাকাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে নানা যানবাহনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন নৌ পুলিশের সদস্যরা। স্পিডবোটে, নৌ টহল বোটে করে নৌ পুলিশের সদস্যরা নদীতে ঘুরে ঘুরে এ টহল দিচ্ছেন। এ সময় কাঁচপুর ব্রিজের নিচে থাকা ইঞ্জিনচালিক নৌকা ও লঞ্চ থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা গেছে নৌ পুলিশকে। এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, জেলার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। মৌচাক চেকপোষ্টে তল্লাশীকালে তপু (২৩) নামে এক যাত্রীর কাছ থেকে দুই কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। কোথাও কোন ধরণের নাশকতা, অরাজকতা বা বিশৃংখলার খবর পাওয়া যায়নি। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মশিউর রহমান (পিপিএম বার) গাঁজা উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এলাকায় সড়ক-মহাসড়কে এখন (বিকেল ৪টা) পযর্ন্ত কোন ধরনে বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটে নাই।
বিআইডব্লিউটিএর পরিদর্শক সমর কৃষ্ণ বলেন, আমাদের লঞ্চ চলাচল বন্ধের ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা নেই। লঞ্চ মালিকরা কেন চালাচ্ছেন না এটা তারাই বলতে পারবেন। লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি বদিউজ্জামান বাদল বলেন, আমাদের ওপর কোনো নির্দেশনা নেই। সরকারি বা বেসরকারি কেউই কোনো চাপ বা নির্দেশনা দেয়নি। যাত্রী না থাকায় লঞ্চগুলো এমনিতেই বন্ধ হয়ে গেছে। এখানে অন্য কোনো বিষয় নেই। নারায়ণগঞ্জ নৌ পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) মীনা মাহমুদ জানান, লঞ্চ বন্ধ আছে এমন তথ্য আমার জানা নেই। টহল চলছে কারণ নদীপথের মাধ্যমে যেন কেউ এসে নাশকতা করতে না পারে। এই বিশেষ টহল চলবে আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, কেউ যাতে নাশকতার উদ্দেশ্যে কোন কিছু বহন করে নিয়ে যেতে না পারে এ কারণে নিয়মিত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে চেকেপাস্টে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।