নিজস্ব প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জ সদর থানাধীন চর সৈয়দপুর এলাকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য করাটাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এ এলাকায় সন্ত্রাসীদের সাথে সমঝতা না করে কোন ব্যবসায়ই হাত দিতে পারছেন ব্যবসায়ীরা। যদি কোন ব্যবসায়ীকে ঘায়েল না করা যায়, তাহলে ওই ব্যবসায়ীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানি করা হয়।
তেমনি এক মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন চর সৈয়দপুর এলাকার ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন। ব্যবসা করার কারণে তাকে দীর্ঘদিন যাবত বিরক্ত করে আসছিলো এলাকার বেশ কিছু সন্ত্রাসী। কিন্তু সন্ত্রাসীদের তোয়াক্কা না করে ব্যবসায় পরিচালনা করায় তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এমনটাই অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ী মোশারফের কন্যা মৌসুমী আক্তার।
মৌসুমী অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবা (মোশারফ হোসেন) একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তাকে দীর্ঘদিন যাবত বেশ কিছু সন্ত্রাসীরা ডির্ষ্টাব করে আসছিলো। কিন্তু বাবা এগুলোতে ভয় পেতেন না। তাই ওই সন্ত্রাসীরা মিথ্যা মামলা দিয়ে বাবাকে হয়রানি করছে।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় গত ২১ জানুয়ারির যে মামলায় বাবাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৭ জানুয়ারি দিবাগত রাত দেড়টায় চর সৈয়দপুর এলাকার স¤্রাট কনষ্ট্রাকশন ফার্মে আমার বাবাসহ আরও কয়েকজন ব্যক্তি হামলা ভাংচুর ও লুটপাট করে। অথচ ১৭ জানুয়ারি রাত দেড়টায় আমার বাবা আমাদের সাথেই বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন। একজন ঘুমিয়ে থাকা ব্যক্তি কি করে অফিস ভাংচুর করে? এতেই বুঝাযায়, এই মামলাটি সম্পূর্ন মিথ্যা বানোয়াট।
সুষ্ঠু তদন্তের দাবি রেখে মৌসুমী আরও বলেন, আমি জানামতে থানায় যে কোন মামলা হওয়ার আগে তদন্ত করা হয়। কিন্তু পুলিশ এখানে কি তদন্ত করেছে, আমার বোধগম্য হয় না। আপনারা (সাংবাদিক) থানায় খোঁজ নিয়ে দেখেন, আমার বাবার নামে থানায় একটি জিডিও নাই। তিনি ব্যবসা বাণিজ্য ছাড়া কিছুই বুঝেন না। একজন ব্যবসায়ীকে যদি এভাবে হয়রানি করা হয়, তাহলে আমরা কোথায় যাবো? তাই নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কাছে আমি অনুরোধ করছি, দয়াকরে এ মামলাটি পুনরায় সুষ্ঠু তদন্ত করার ব্যবস্থা করা হয়। তাহলেই এ ষড়যন্ত্রের পেছনে কারা লুকিয়ে আছে, সব বেরিয়ে আসবে। আমি চাই, এ মামলায় যেন আমার বাবার মত কোন নিরিহ মানুষ হয়রানির শিকার না হয়। সে বিষয়ে নজর রাখার জন্য আমি পুলিশ সুপারের কাছে আবারও করজোড় অনুরোধ করছি।
এছাড়াও তিনি বলেন, সেদিন কারা কারা স¤্রাট কনষ্ট্রাকশন ফার্মে হামলা ও ভাংচুর চালিয়েছে আমার কাছে তার সিসি ফুটেজ আছে। আমি সেই ফুটেজে দেখেছি, তারা নিজেরাই নিজেদের অফিস ভেঙ্গেছে। তারা নিজেরাই নিজেদের অফিস ভেঙ্গে আমার বাবাসহ নিরিহ ব্যক্তিদের নামে মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে যারা নিরিহ ব্যক্তিদের হয়রানি করছে, আমি তাদেরও বিচার চাই। কেন অন্যায় না করেও নিরিহ ব্যক্তিরা জেল খাটবে? আজ তিন-চারদিন হয়ে গেলো আমার বাবাকে দেখিনা। এটা যে কতটা ষন্ত্রণা ও বেদনাদায়ক, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। শুধু বলবো, আমি আমার বাবাকে ফেরত চাই। সে যদি অপরাধী না হয়, তাহলে তার মুক্তিতে প্রশাসনের সার্বিক সহযোগীতা চাই।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ই জানুয়ারি গভীর রাতে স¤্রাট কনষ্ট্রাকশন ফার্মে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনার ৩ দিন পর ২১ জানুয়ারি দিবাগত রাতে স¤্রাট কনষ্ট্রাকশন ফার্মের ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২৭, তারিখ ২১/১/২৩ইং।
মামলার আসামীরা হলেন, মৃত সামাদ মিয়ার ছেলে মো: বিল্লাল হোসেন (৩৫), মৃত মোস্তফা মিয়ার ছেলে মোশারফ হোসেন (৪০), ওহাব আলীর ছেলে নয়ন (২৬), মৃত মো: আলী পোকার ছেলে মো: কাসেম ওরফে পোকা কাসেম (৪২), মৃত ওহাব আলীর ছেলে মো: সেলিম (৩২), মো:মনির হোসেনের ছেলে মো: শ্যামল (২৮) ও মৃত তারু মিয়ার ছেলে মো: দৌলত (৩৮)। আসামিরা সকলে পুরান সৈয়দপুর, সৈয়দপুর শান্তিনগর ও গোগনগরের বাসিন্দা।