রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেওয়া কাউন্সিল আলহাজ্ব আবুল কাউসার আশার জন্মদিন। তরুন, মেধাবী রাজপথের সক্রিয় রাজনৈতিক নেতা আবুল কাউসার আশার জন্মদিন উপলক্ষে বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। তার জন্মদিন উপলক্ষে আগামীদিনগুলো জনকল্যাণে কাজ করার যত পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বন্দরের ২৩ নং ওয়ার্ডে প্রথমবারের কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে জনকল্যানে কাজ করার দায়িত্ব পালন করেছেন প্রায় দেড় বছর। আবুল কাউসার আশা। এক সময়ে ছাত্র দলের ফ্রন্ট লাইনের এই নেতা বর্তমানে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি। তার বাবা শহর-বন্দরের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল কালাম বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য। আবুল কাউসার আশা নির্বাচনের আগে নানা প্রতিশ্রুতি আর আশার বানী নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়েছেন। দিন শেষে তিন প্রার্থীর মধ্যে তাকেই ভোটাররা বেছে নিয়েছেন। ৯ ফেব্রুয়ারি শপথ গ্রহণের পর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, আমি প্রথমে আমার ওয়ার্ডবাসীকে ধন্যবাদ জানাবো, কারণ তারা আমাকে বিজয়ী করে আপনাদের সোবা করার সুযোগ করে দেয়য়। । তাদের নিয়ে আমার অনেক পরিকল্পনা আছে। এরমধ্যে ওয়ার্ডের রাস্তা ঘাট নির্মাণ, সুপেয় পানির ব্যবস্থা, মশক নিধন, সুশিক্ষার ব্যবস্থা, খেলার মাঠ, জলাবদ্ধতা নিরসন উল্লেখ্যযোগ্য। এছাড়া বিধবা ও বয়স্ক ভাতাসহ সরকারি যে অনুদান আছে তা স¦চ্ছ ভাবে প্রকৃত লোকজনের দ্বারে দ্বারে পৌছে দেয়া। সেই সাথে আমার নির্বাচনী প্রচারণায় বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো মাদক নির্মূল করা। মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। ইনশাআল্লাহ সবাইকে সাথে নিয়ে ২৩নং ওয়ার্ডকে মাদক মুক্ত করবো।
তিনি আরো বলেন, ২৩নং ওয়ার্ডে অধিকাংশ পঞ্চায়েত কমিটির দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম নাই। আমরা পঞ্চায়েত কমিটি নিয়ে কাজ করবো। মাদক নির্মূলের জন্য প্রতিটি এলাকায় মাদক বিরোধী কমিটি করা হবে। কমিটিগুলোর একটি তালিকা থানায় ও এসপি অফিসে জমা দিয়ে দিবো। পঞ্চায়েত কমিটি স্ট্রং থাকলে অপরাধ দমনে কার্যকরী প্রদক্ষেপ নেয়া যাবে। এবং বিচার-শালিসের বিষয়ে আমার উপর চাপ কমবে।
তিনি আরো বলেন, সিটি করপোরেশনের এতো বড় বড় রাস্তা, অথচ অর্ধেক রাস্তায় ইট, বালু, সিমেন্ট রেখে বন্ধ করে রেখেছে। আমরা যদি সচেতন না হই, তাহলে কাউন্সিলর বলেন আর মেয়র বলেন কাজ করতে বাধাগ্রস্ত হবেই। এই বিষয়ে বার বার বলতে পারবো, বড় জোর সিটি করপোরেশনের লোকজন এসে ওঠিয়ে নিয়ে যাবে। কিন্তু এটা কোন স্থায়ী সমাধান নয়। মানুষকে সচেতন হতে হবে।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, জনগণের ট্যাক্সের টাকায় রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। অথচ পৌরসভার রাস্তার এক পাশে বাজার বসিয়ে রেখেছে। কেউ না না কেউ এ কাজটি করেছে। এই বিষয়ে আমাদের সচেতন এবং কঠোর ভুমিকা নিতে হবে।
যুবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের ওয়ার্ডে খেলার মাঠের অভাব রয়েছে এটাই বাস্তবতা। আমাদের অবকাঠামোর উন্নয়ন হয়েছে কিন্তু আমাদের খেলার মাঠ নেই। আমাদের পূর্ব পরিকল্পনা আছে মাঠের ব্যবস্থা করা যদি পর্যাপ্ত জায়গা পাওয়া যায়। খেলার মাঠের জায়গা পেলে আমরা মেয়র মহদয়ের কাছে প্রস্তাব দিবো। তবে আমাদের জায়গা কম বেশি থাকার চেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে আমাদের সচেতন হতে হবে। আমি কি মাদক নিয়ে থাকবো, না কি এর বাইরে থাকবো, আমি কি মোবাইলের মধ্যে ডুব দিয়ে থাকবো, না কি মাঠে গিয়ে খেলাধুলা করবো, এখানে নিজের সচেতনতা সবচে বেশি জরুরী। আমি এক্ষেত্রে যে কাজটি করার চেষ্টা করছি মানুষকে সচেতন করা। জীবনকে দুই ভাগে উপভোগ করা যায়, মোবাইলে লাইফটাকে যেমন এনজয় করতে পারবেন আবার মাঠে-ঘাটে খেলাধুলা করে লাইফকে এনজয় করা যায়। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে তাদের সন্তানদের বিষয়ে। তাদের সঠিক ভাবে দেখাশুনা করতে হবে, লেখা-পড়া ও খেলাধুলায় মনোযোগী রাখতে হবে, আর মাদক থেকে দুরে রাখতে হবে।
ওয়ার্ডের প্রবীনদের নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সমাজকে যদি শরীর ধরি, তাহলে মাথা হচ্ছে প্রবীণরা। সমাজের মাথা তারা। আগে একটা সময় ছিলো গ্রামের তিন জন্য মুরব্বি বসলে তিন গ্রামের সমস্যা সমাধান করা যেতো। সমাজের অবক্ষয়ের কারণে এখন দশজন মিলে একটা ঘরের সমস্যা সমাধান করতে পারি না। কারণ একে অপরকে মানতে চায় না। এক্ষেত্রে চেষ্টা করছি সমাজের ভিতর যেনো নবীন- প্রবীনদের মাঝে শ্রদ্ধা, স্নেহের সর্ম্পকটা যেনো আগের মত থাকে। নবীন-প্রবীনদের মধ্যে এই ভারসাম্য ঠিক রাখতে হবে। এই ভারসাম্যটা তখনি নষ্ট হয় যখন একটি ছেলে মাদকাসক্ত হয়ে যায়। একটি ছেলে মাদকাসক্ত হয়ে গেলে তার মধ্যে কখন কাকে সম্মান করবে তখন বোধ কাজ করে না। পরিবেশটা আস্তে আস্তে এমন হয়ে যাওয়াতে তাদের ভিতর এক ধরণের রক্ষণশীল মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে যে এখানে কথা বলার পরিবেশ নাই। আমাদের অভিভাবকদের চিন্তাভাবনা পরিববর্তন করতে হবে। আগে এমন একটা সময় ছিলো সমাজের মুরুবী, শিক্ষক, চাচারা আমাদের শাসন করতো। আর এখন একটা ছেলে অন্যায় করছে তাকে শাসন করতে গেলে তার অভিভাবক বলে ফেলেন অন্যায় করছে তুমি বলার কে? আমাদের সময় শিক্ষক শাসন করতেন আমরা তখন ভয় পেতাম আর এখন বর্তমানে স্কুল প্রতিষ্ঠানে বেত ব্যবহারে নিষেধ আছে। সামজিক অবক্ষয়ের সাথে আমরা যারা অভিভাবক ও প্রবীণ আছেন তারা কানো না কোনো ভাবে জড়িত। সমাজ ব্যবস্থা ছিলো এক রকম এখন সেই ব্যবস্থা নাই। মানসিক চিন্তা ভাবনার পরির্বতন না হলে কোনো কিছু করতে পারবো না। সেই ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে এবং মানসিকতকা পরির্বতন খুব জরুরি, নবীন ক্ষেত্রে যা প্রবীণের ক্ষেত্রেও তা।
পরিশেষে তিনি বলেন, আগামী বছরগুলো দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সাথে নিয়ে একটি সুন্দর ওয়ার্ড গড়ে তোলার চেষ্টা করবো।
তার জন্মদিন উপলক্ষে যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেইসবুক, টুইট, ইনস্টাগ্রামে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তরুন মেধাবী এ জনপ্রতিনিধি।