ফতুল্লা থানাধীন শাসনগাঁওস্থ (বিসিক) দেওয়ান বাড়ীর হাজী আলমাস দেওয়ানের ছেলে মো: ইমরান দেওয়ান। সারাজীবনের সঞ্চয় দিয়ে তিনি একই থানাধীন বক্তাবলীর চর রাজাপুর এলাকায় ১৭ শতাংশ জমি খরিদ করেন এবং সেই জমিতে ‘দেওয়ান স্টীল বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং’ নামে একটি ফ্যাক্টরি গড়ে তুলেন। সেই ২০১১ সাল থেকে দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর যাবৎ ফ্যাক্টরিটি তিনি পরিচালনা করে আসছেন এবং ওই ফ্যাক্টরির অর্ধাংশ তিনি ভাড়া দিয়ে আসছেন। কিন্তু হঠাৎ করেই চাঁদাবাজদের নজরে পড়ে সেই ফ্যাক্টরিটি। তারপর গত ৬ মাস আগে হঠাৎ একদিন রাতে কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও স্থানীয় চাঁদাবাজ ইমরানের কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। শুধু তাই নয়, চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর ওইসকল সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজরা তার শাসনগাঁওস্থ নিজ বাসায় গিয়ে প্রকাশ্যে ‘এক কোটি টাকা চাঁদা না দিলে ফ্যাক্টরিটি ২ দিনের মধ্যে লিখে দিতে হবে’ বলে হুমকি দেন। আর ফ্যাক্টরিটি লিখে না দিলে ইমরানকে খুন করা হবে। এসব বিষয়ে ইমরান সংশ্লিষ্ট থানা, পুলিশ সুপার ও র্যাব-১১’র দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও কোন সহযোগীতা পান নি। এমন সব অভিযোগ সামনে এনে নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইমরান দেওয়ান।
রোববার (২২ অক্টোবর) ফতুল্লা থানাধীন শাসনগাঁওস্থ (বিসিক) দেওয়ান বাড়ীতে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে ইমরান বলেন, উত্তর নরসিংপুর এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ সুমন (৩৯), চর রাজাপুর বক্তবলী এলাকার শাহিন (৪২), চাঁদনী হাউজিং এলাকার মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে হামিদ প্রধান (৪৮), ইসদাইর বুড়ির দোকান এলাকার নাসির (৪০), মাসদাইর দাতা সড়ক এলাকার মৃত রোস্তম আলীর ছেয়ে পিজ্জা শামীম (৫৫), শাসনগাঁও এলাকার নান্নু মিয়ার ছেলে মুন্না (৩২), একই এলাকার মৃত হারুন মিয়ার ছেলে সজিব (৩০), মুসলিমনগর এলাকার মৃত আলী আকবর বেপারীর ছেলে সাদ্দাম বেপারী (৩০), নবীনগর এলাকার শাহিন দর্জির ছেলে ইমরান দর্জি (৩১) সহ আরও অজ্ঞাত ২০-২৫ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গত ৩০-০৯-২০২৩ ইং তারিখে রাত ০৯.৩০ মিনিটে আমার নিজ বাড়িতে চাঁদার জন্য আসে। তাদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় অভিযোগ করার পর পুলিশ কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় সন্ত্রাসীরা গত ১৯ অক্টোবর বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে বিবাদীগণরা দেশীয় ধারালো ছুড়ি, চাক্কু, ও অস্ত্রসহ আরও অজ্ঞাতনামা ৩০-৩৫ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী আমার ফ্যাক্টরির ভাড়াটিয়াাদের মারধর করে ফ্যাক্টরির জরুরী যন্ত্রাংশ সহ মালামাল নিয়ে জোরপূর্বক ফ্যাক্টরির ভাড়াটিয়া ও শ্রমিকদের বের করে আমার ফ্যাক্টরির মেইন গেটের সামনে ইট ও সিমেন্ট দিয়ে পাকা দেয়াল নির্মাণ করে এবং আমার ফ্যাক্টরির মধ্যে দেওয়ান স্টিল বিল্ডিং নামের দোকানের প্রায় ৩৫,০০,০০০/= থেকে ৪০,০০,০০০/= টাকা মূল্যের ঢেউটিন ও প্রোফাইল টিন এবং অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। উক্ত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের কার্যকলাপের প্রমাণ যেন না থাকে তাই তারা প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরা, ডিভিআর মেশিন ভেঙ্গে ফেলে। উক্ত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা আমার প্রতিষ্ঠানের সামনে দেয়াল নির্মাণ করার সময় আমি ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশের সাহায্য চাহিলে তারা আমাকে আশ্বস্থ করেও কোন পুলিশ পাঠায় নাই। আমি পরপর তিন বার ৯৯৯ এ কল করি। তাদের কোন সহযোগিতা না পেয়ে গত ১৯-১০-২০২৩ ইং তারিখে আমি ও আমার পিতা সশরীরে ফতুল্লা থানায় যাই এবং একটি অভিযোগ দায়ের করেন । থানা থেকে পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশ ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। এ সময় পুলিশ দেখে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায় ও দেয়াল নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। পুলিশ চলে গেলে সন্ত্রাসীরা পুনরায় দেয়াল নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ফতুল্লা থানার পুলিশের নিরব ভূমিকা দেখে পরবর্তীতে আমরা ২১-১০-২০২৩ ইং তারিখে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আরও একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। আমি ও আমার পরিবার এ বিষয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন যাপন করছি। তিনি এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সহযোগীতা চান এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।