ক্ষমতা আঁকড়ে ধরার কোনো চেষ্টা আওয়ামী লীগের নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জনগণের কাছে যাবে, জনগণ যাকে ভোট দেবে সে ক্ষমতায় আসবে। ক্ষমতা আঁকড়ে ধরার কোনো চেষ্টা আমাদের নেই।
বুধবার গণভবনে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের আমলে দেশের উন্নতি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা যতক্ষণ ক্ষমতায় আছি দেশের উন্নতি করছি। দেশে যে উন্নতি হয়েছে এটাতো কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। আজকে বাংলাদেশ বদলে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের তো হাওয়া ভবন নেই। কাউকে পাওনা দিয়ে ব্যবসা নিতে হয় না। ব্যবসায়ীরা স্বাধীনভাবে ব্যবসা করতে পারেন। অন্তত এটুকু সুযোগ আমরা করে দিয়েছি। ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের যাত্রা শুরু হবে।
হরতাল-অবরোধে নাশকতাকারীদের শাস্তি পেতে হবে বলে জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, তাদের কোনো ক্ষমা নেই। তাদের শাস্তি ভোগ করতে হবে। আমি জনগণকেও বলবো তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে।
তিনি বলেন, যারা রেললাইন উপড়ে, রেললাইন কেটে মানুষ মারার পরিকল্পনা করে বা জীবন্ত মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারে, এদের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ বলে কিছু নেই। এটা জনগণকেই প্রতিহত করতে হবে। সেটাই আমার আহ্বান সারাদেশের মানুষের প্রতি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যারা রেললাইন কেটে, বগি ফেলে মানুষ হত্যার পরিকল্পনা করে আর আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায়, পিটিয়ে পিটিয়ে পুলিশ-সাংবাদিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষকে মারে, মিছিলে মেয়েদের ওপর অত্যাচার করে এদের ক্ষমা নাই। এদের শাস্তি একদিন পেতেই হবে। জনগণকে বলবো এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য।
গাজীপুরের শ্রীপুরে ট্রেনের বগি লাইনচ্যুতের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আগের রাতে গ্যাস কাটার মেশিন দিয়ে প্রায় ২০ ফুট রেল ট্র্যাক কাটার ফলে নেত্রকোনা থেকে আসা মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের আটটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার মানে কি? এর আগেও কয়েকবার এ ধরনের কাজ বিএনপি সন্ত্রাসীরা করেছে। সঙ্গে সঙ্গে ধরাও পড়েছে। কাজেই আমরা সেখানে মানুষকে বাঁচাতে পেরেছি। কিন্তু এটা হয়েছে একেবারে ভোররাতের দিকে, সাড়ে ৪টার দিকে। গ্যাস সিলিন্ডারসহ, গ্যাস কাটার মেশিন দিয়ে রেললাইন কেটেছে। ওটা ফেলে চলে গেছে। ওটা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
তিনি বলেন, একটু চিন্তা করে দেখুন, কি রকম ধ্বংসাত্মক কাজ! এর নাম আন্দোলন? তার মানে হচ্ছে রেলের বগি ফেলে মানুষকে হত্যা করা। মানুষকে হত্যা করে সরকার উৎখাত করবে? মানুষ হত্যা করে আন্দোলন?
শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি না এই আন্দোলন করে কী পাবে তারা। বিএনপি যে এই জ্বালাও পোড়াও করে যাচ্ছে। প্রতিদিন তারা অবরোধ আর হরতাল ডেকে যাচ্ছে। হরতাল-অবরোধ মানে কি কয়েকখান বাস পোড়ানো, গাড়ি পোড়ানো, যাত্রীসহ বাস পোড়ানো।
জ্বালাও পোড়াওয়ের ঘটনা বিএনপি এর আগেও করেছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, তারা চালের গাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে, ধান যাচ্ছে ধানের গাড়ি পোড়াচ্ছে। মানে মানুষকে ক্ষুধায় মারা। এ ঘটনা এর আগেও তারা করেছে ২০১৩ সালে। আমি জানি না তাদের কোনোমতে কেউ থামাতে পারবেন কি না।
তিনি বলেন, এ দেশে তারা কি রাজনীতি করে, তাদের দলটা কোথায়। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে দুর্ভাগ্য। যেখানে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, সে সময় যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটায় এ দেশের ভবিষ্যৎটা কি, সেটাই আমার প্রশ্ন।