মাদক ও অপরাধ নির্মূল করে ক্লীন নারায়ণগঞ্জ গড়ার প্রত্যাশায় সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে নিয়ে আয়োজিত সমাবেশ শেষ পর্যন্ত হতাশা ও ক্ষোভের সমাবেশে পরিণত হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তথা জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কেউ না আসায় সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় বক্তাদের বক্তব্যে। সকলেই জবাব চাইতে থাকেন অনুষ্ঠানের আয়োজক নারায়নগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের কাছে। অনেকটা ক্ষোভ প্রকাশ করে মাদক ব্যবসায়ী ও প্রশাসনকে ইঙ্গিত করে শামীম ওসমান বলেছেন, ‘রাত ১২ টার সময় ৫ লাখ লোক নামানোর ক্ষমতা শামীম ওসমান রাখে, ইনশাআল্লাহ। নামার পর যদি জনগণ বলে আমরা কাউকে এখানে চাই না, তাহলে কিন্তু কারও এখানে থাকার উপায় নেই। আগের মেজাজ থাকলে এখনি বলে দিতাম। বয়স হয়েছে ৬২, তাই বাষট্টি হিসেবে বক্তব্য দিলাম, ২৬ বানায়া দিয়েন না কিন্তু। সাবধান থাকবেন সবাই।শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের ইসদাইর ওসমানি স্টেডিয়ামে সকল শ্রেণি পেশার মানুষদের নিয়ে ডাকা এক মতবিনিমযয় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূলে প্রতি ওয়ার্ডে কমিটি করার আহ্বান জানিয়ে শামীম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জ-৪ ও ৫ আসনের প্রতিটি ওয়ার্ডে এক হাজার জনের কমিটি করেন। সব মিলিয়ে ৯০ হাজার লোক হবে। এদের যদি ৫ জন করে পরিবার সদস্য থাকে তাহলে সাড়ে ৪ লাখ লোক হবে। লোক আরও বাড়বে। আর এই সাড়ে ৪ লাখ লোক কালকে ইচ্ছে করলে নারায়ণগঞ্জে নামাতে পারি।
তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জে যারা আছেন সবাইকে মনে রাখতে হবে আমার নাম শামীম ওসমান। আমি কারও দয়ায় চলি না। আমি কারও দয়ায় চলার লোক না। আমার নেত্রী শেখ হাসিনা কারও কাছে মাথা নত করেন না। আমি রাজপথ থেকে সৃষ্টি হওয়া মানুষ, রাজপথে শেষ হবো।
অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফলে অনেকে সুযোগ নিচ্ছেন বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে নারায়ণগঞ্জে অনেকে সুযোগ নিয়ে চলে যাচ্ছেন। প্রেসক্লাবকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব আপনারা আলোচনা ডাকেন, ওই গোল টেবিলে বসবো আমি। কারণ ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটা সুন্দর নারায়ণগঞ্জ গড়তে চাই। আর আমি আল্লাহকে খুশি করে মরতে চাই।
মাদক বিরোধী সভায় প্রশাসনের কর্মকর্তারা অনুপস্থিত কেন, সেই প্রশ্নের জবাবে শামীম ওসমান বলেন, যে প্রশ্ন আজকে সাংবাদিক, আইনজীবীসহ সকলে করেছেন। নারায়ণগঞ্জ প্রশাসনের অন্তত একজনকেও যারা এখানে আসতে দেন নাই কিংবা আসেন নাই কেন? এই প্রশ্ন যদি এখানে করি তাহালে আপনারা ভাববেন শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জে প্রশ্ন করেছে। আমি শামীম ওসমান জীবিত থাকলে, এই প্রশ্ন আমি শামীম ওসমান জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর সামনে করবো। যারা জনগণের সেবক হিসেবে জনগণের চাকরি করে এই নারায়ণগঞ্জে এসেছেন আজকে তারা এখানে অনুপস্থিত কেন? সেই প্রশ্ন আমি জিজ্ঞাসা করব। আমি মাথা নত করার মানুষ না। এমন কোনো কাজ করি নাই, যে আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করব। ৪২ লাখ টাকা উদ্ধার হয় যাত্রাবাড়ীতে দেখানো হয় ফতুল্লায়। ‘আমি জেলা প্রশাসককে সভায় উপস্থিত থাকার জন্য বার বার বলেছি। আমি পুলিশ-প্রশাসনকে নিমন্ত্রণ করেছি’। বলে যোগ করেন এই সংসদ সদস্য।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি চন্দন শীল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েলসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষজন উপস্থিতি ছিল।