নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বকেয়া বকেয়া বেতন পরিশোধ না করে ‘বিনা নোটিশে’ ৫৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ছাঁটাইয়ের অভিযোগ উঠেছে একটি রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা বিরুদ্ধে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে কাশীপুর ইউনিয়নের হাটখোলা এলাকার ‘ক্রোনী অ্যাপারেলস লিমিটেড’ কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন কর্মীরা।
এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানা এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ে আলাদা অভিযোগ দিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ছাঁটাই ও বকেয়া বেতদের দাবিতে পাওয়া অভিযোগ তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ফতুল্লা মডেল থানার ওসি নুরে আযম।
কর্মচারীরা জানান, মঙ্গলবার সকালে তারা অন্যদিনের মতো কর্মস্থলে গেলে কারখানার গেইটে তাদের ছবি ও আইডি নম্বরসহ একটি নোটিশ ঝুলতে দেখেন। এতে বলা হয়েছে, কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের চাকরিচ্যুত করেছে।
তবে নোটিশে এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনো কারণ দেখানো হয়নি বলে জানিয়েছেন কর্মচারীরা।
ক্রোনী অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার আইটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মাহাদী হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, “কোনো কারণ না জানিয়ে কর্তৃপক্ষ আমাদের চাকরিচ্যুত করেছে। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বেতন পাইনি।
“কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বলেন, আমাদের কেবল ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন দেবেন। এমনকি, তারা আমাদের দুই মাস আগের তারিখের পদত্যাগপত্রে সই করার জন্য চাপ দিচ্ছেন।”
একই কারখানার স্টোর ম্যানেজার আনোয়ার হোসেনে সাথে কথাবলে জানাযায়, চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কেউ কেউ এ প্রতিষ্ঠানে আট থেকে ১০ বছর ধরেও চাকরি করছেন। শ্রম আইন অনুযায়ী চাকরিচ্যুত করার আগে সকল বকেয়া ও তিন মাসের অগ্রিম বেতন পরিশোধ করার কথা। অথচ তারা কোনোটাই মানেননি।
“আইন অনুযায়ী ন্যায্য পাওনার দাবি জানাচ্ছি; অন্যথায় আমরা শ্রম আদালতে যাব”, বলেন আনোয়ার।
ক্রোনী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসলাম সানি বলেন, “কারখানার বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করে কয়েকজন কর্মচারী ছাঁটাই করা হয়েছে। তবে, কার কত পাওনা রয়েছে তা আমরা হিসাব করছি।
“সমস্ত কর্মচারীকে তাদের বকেয়া পরিশোধ করা হবে। আপাতত তাদের এক মাসের বেতন নিতে বলা হয়েছে। বাকিটাও পর্যায়ক্রমে দেওয়া হবে।”
এর আগে ২৪ ডিসেম্বর ক্রোনী গ্রুপের আরেকটি কোম্পানি ক্রোনী টেক্স সোয়েটার লিমিটেডে ‘বিদেশি অর্ডার কমে গেছে’ উল্লেখ করে লে-অফ ঘোষণা করা হয়। প্রতিবাদে পরদিন সকালে কারখানার কয়েকশ শ্রমিক ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ সড়কে বিক্ষোভ করে।
এ ছাড়া ৮ ফেব্রুয়ারি অন্তত সাত হাজার শ্রমিক-কর্মচারীর বকেয়া পরিশোধ না করে একই গ্রুপের অবন্তী কালার লিমিটেড কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।