ফাইল ছবি
পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্য দেশগুলো যদি লড়াইয়ের জন্য ইউক্রেনে সেনা পাঠায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে রাশিয়ার সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠবে। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এই সতর্কতার কথা বলা হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের চরম অবনতি হয়েছে। ১৯৬ সালে কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের পর এটিই সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি। এর আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়া ও ন্যাটোর মধ্যে সরাসরি সংঘাতের বিপদ নিয়ে সতর্ক করেছিলেন।
সোমবার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইউরোপীয় দেশগুলোর ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর দ্বার উন্মুক্ত করেছেন। যদিও তিনি সতর্কতা থেকে বলেছেন, এই বিষয়ে এখনও ঐকমত্য হয়নি।
ম্যাক্রোঁর মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ন্যাটো দেশগুলো থেকে ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর সম্ভাবনা আলোচনা একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ নতুন উপাদান।
ইউক্রেনে লড়াইয়ের জন্য ন্যাটো সদস্য দেশের সেনা পাঠালে কেমন ঝুঁকি থাকবে, এক সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পেসকভ বলেছেন, এমনটি হলে আমাদের সম্ভাব্যতা নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন নেই, আমাদের অনিবার্যতা (সরাসরি সংঘাতের) নিয়ে কথা বলতে হবে।
ক্রেমলিন মুখপাত্র বলেছেন, পশ্চিমাদের নিজেদের প্রশ্ন করা উচিত যে, এমন দৃশ্যপট তাদের দেশ ও জনগণের স্বার্থের পক্ষে যায় কি না।
শীতল যুদ্ধের সময়কার দুঃস্বপ্ন রাশিয়া ও ন্যাটোর মধ্যে সরাসরি সংঘাত নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতা ও জনগণের মধ্যে আলোচনা বড় ধরনের উত্তেজনার ইঙ্গিত হাজির করে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের ৩২ বছর পর রাশিয়ার পুনর্জাগরণ মোকাবিলায় পশ্চিমাদের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির বিপদও হাজির করে।
ন্যাটোর প্রধান শক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক অস্ত্র ভাণ্ডার। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সতর্ক করে বলেছিলেন, রাশিয়া ও ন্যাটোর মধ্যে সংঘাতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হতে পারে।
২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণের পর পশ্চিমা নেতারা বলেছিলেন, রণক্ষেত্রে রাশিয়াকে পরাজিত করতে ইউক্রেনকে তারা সহযোগিতা করবেন। কিন্তু রাশিয়ার সেই পরাজয় ঘটেনি।
২০২৩ সালে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ ব্যর্থ হয়েছে। ইউক্রেনের জন্য মার্কিন সহযোগিতা আটকে যাওয়ার পর ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড দখলে নতুন প্রচেষ্টা শুরু করেছে রুশ সেনারা।
ম্যাক্রোঁ বলেছেন, রাশিয়াকে মোকাবিলার কৌশলের ক্ষেত্রে পশ্চিমাদের কোনও কিছুই বাদ দেওয়া উচিত নয়। রাশিয়া যাতে জয়ী না হয় সেজন্য তারা সবকিছু করবেন।
এর আগে স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো বিস্তারিত না জানিয়ে বলেছিলেন, বেশ কয়েকটি ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশ দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে।
হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মার্কিন সেনাদের পাঠানোর কোনও পরিকল্পনা নেই যুক্তরাষ্ট্রে। এছাড়া ইউক্রেনে ন্যাটো সেনাদের পাঠানোরও কোনও পরিকল্পনা নেই।