হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস এম শফিকুল ইসলামকে তৃতীয় দফায় জেরা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে এ জেরা করা হয়।
আসামি-পক্ষের আইনজীবীরা আরও একদিন জেরার জন্য সময় চাইলে আদালত ২৩ এপ্রিল জেরার দিন ধার্য করেছেন। সেই সঙ্গে মামুনুল হকের জামিন আবেদন করলে আদালত শুনানি শেষে পরে আদেশ দিবেন বলে জানিয়েছেনএর আগে সকালে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে দিয়ে কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। সেই সঙ্গে দুপুরে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে দিয়ে তাকে আদালতে উঠানো হয়। ক্র্যাচে ভর দিয়ে মামুনুল হক আদালতে উঠেন। জেরা শেষে তাকে আবার কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ মামলায় ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়ন বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস এম শফিকুল ইসলামকে তৃতীয় দিনের মতো জেরা করেছি। জেরায় তিনি অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি। যৌনক্রিয়ার আলামত তিনি সংগ্রহ করেননি। আমরা আজ তাকে ৭০-৮০টি প্রশ্ন করেছি। তিনি একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি। তিনি শুধু বলেছেন জানি না মনে নেই।তিনি আরও বলেন, আমরা এ মামলায় মামুনুল হকের জামিন চেয়েছিলাম। যেহেতু তিনি অনেকদিন ধরে কারাগারে আছেন। আমরা মানবিক কারণে জামিন চেয়েছিলাম। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন। আদেশ পরে দিবেন বলে জানিয়েছেন। আশা করি আমরা ন্যায়বিচারের স্বার্থে জামিন পাবো।আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, আসামিপক্ষ ইচ্ছা করে মামলাটির বিচার কার্যক্রম বিলম্বিত করার জন্য তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করছে। এ পর্যন্ত তারা তিনদিন জেরা করেছে। আরও একদিন সময় চেয়েছে। সচরাচর একদিনের জেরাই যথেষ্ট হয়ে যায়। রায় তাদের বিপক্ষে যাবে এজন্য দেরি করছে।
২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে তাকে ঘেরাও করেন। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর করেন এবং তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। ঘটনার পর থেকে মামুনুল হক মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় অবস্থান করে আসছিলেন। এ সময় পুলিশ তাকে নজরদারির মধ্যে রাখে।এরপর গত ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় মামুনুলকে। পরে এ ঘটনায় ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা করেন ওই নারী। তবে ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক।