পৃথিবীর কোনো দেশে গণতন্ত্র পারফেক্ট না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরাও পারফেক্ট—এটা দাবি করি না। তবে গণতন্ত্রকে ম্যাচিউরিটি দেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চলছে।আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় তিনি এ কথা বলেন।আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানাবেন কি না এবং উপজেলা নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রী স্বজনদের অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেছিলেন। আমরা দেখছি, অনেকেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। এ ব্যাপারে আপনাদের অবস্থান কী—গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘সাংগঠনিকভাবে বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্তরা দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন। তাদের সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে।’তিনি বলেন, ‘আমরা কিন্তু আমাদের গত জাতীয় সম্মেলন সব অনুষ্ঠানে বিএনপিকে দাওয়াত করেছি। আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমন্ত্রণপত্র বিএনপিও পাবে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলও পাবে, আমরা যাদের দিয়ে থাকি।’উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ওটা (মনোনয়ন প্রত্যাহার) অনেকে করেছে, আবার কেউ কেউ যাচাই-বাছাইয়ের টেবিলে। আমরা দলীয়ভাবে আমাদের দলের দায়িত্বপ্রাপ্তরা সক্রিয় উদ্যোগ নিচ্ছে। তারা উদ্যোগে আছেন, সেটা আরও জোরদার করার কথা বলা হয়েছে।’সময় মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গত জাতীয় নির্বাচনে আমরা কতজনকে এমনিতেই বাদ দিয়েছি। ৭৩ জন সংসদ সদস্য দলের মনোনয়ন পাননি। এটা কি একরকম শাস্তি নয়? ২৫ জন মন্ত্রী এই মন্ত্রিসভায় নেই। সময় তো শাস্তি হবে। এটা একটা উদাহরণ। আমাদের অ্যাকশন এখনই হবে তা না, সময় মতো হবে।’আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে পঁচাত্তর থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ধ্বংস করেছে বিএনপি। প্রহসনের নির্বাচন, এক কোটি ২৩ লাভ ভুয়া ভোটার, হ্যাঁ-না ভোটে ১১৪ শতাংশ হ্যাঁ ভোট; এসব কিন্তু তাদেরই সৃষ্টি। নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অধীনে ছিল কিন্তু ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বিযুক্ত করেছেন। আলাদা তাদের প্রশাসনিক ক্ষমতা, অর্থনৈতিক সক্ষমতা এবং জাতীয় সংসদে আইন করে স্বাধীন সত্তায় অধিষ্ঠিত করা হয়েছে। কে করেছে? ৮২টির মতো সংশোধনী আনা হয়েছে। এগুলো করেছেন কে? তাহলে প্রয়াসটা কার আছে? শেখ হাসিনাই এ কাজটা করেছেন।বিএনপি কী করেছে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘মাগুরা মার্কা নির্বাচন, ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন, প্রহসন, এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার, জরুরি সরকার আসার আগে যে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল ২০০৬ সালে।’
‘বিএনপির গণতন্ত্রের প্রতি আগ্রহ কোনো দিনও ছিল না। গণতন্ত্র, স্বাধীন নির্বাচন ব্যবস্থা এবং গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করার কাজটি বঙ্গবন্ধু কন্যা এ দেশে করেছেন। এটা প্রতিষ্ঠিত সত্য,’ বলেন তিনি।আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, ‘আমি এখনো বলছি, উই আর নট পারফেক্ট। পৃথিবীতে আপনি একটি দেশ দেখান, যে দেশে গণতন্ত্র পারফেক্ট। নির্বাচন পুরোপুরি পারফেক্ট। এটা কেউ দাবি করতে পারবে না। আমরাও পারফেক্ট—এটা দাবি করি না। তবে গণতন্ত্রকে ম্যাচিউরিটি দেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চলছে।’
এর আগে আগামী ১৭ মে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেন।