আসন্ন কোপা আমেরিকার জন্য চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করেছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। দলে একটি নতুন মুখ ছাড়াও রয়েছে বেশ কয়েকটি চমক। ঘোষিত স্কোয়াডের আক্রমণভাগে জায়গা পেয়েছেন পোর্তোর ২৪ বছর বয়সী স্ট্রাইকার ইভানিলসন। তবে জায়গা হয়নি নেইমার ও রিচার্লিসনের মতো তারকাদের। এছাড়া গাব্রিয়েল জেসুস, মাথিউস কুনিয়ার মতো খেলোয়াড়দেরও হলুদ জার্সিতে খেলতে দেখা যাবে না কোপার এবারের আসরে।মাঝমাঠে সবচেয়ে বড় চমক অধিনায়ক ক্যাসেমিরোর না থাকাটা। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে সাম্প্রতিক মলিন পারফরম্যান্সের কারণেই বাদ পড়েছেন তিনি।দলে রাখা হয়নি ইউনাইটেডের আরেক তারকা আন্তনিকেও। এছাড়া কোপা আমেরিকার জন্য মনোনীত দলে ঠাঁই হয়নি জুভেন্তাসের ২৭ বছর বয়সী ডিফেন্ডার ব্রেমারেরও।গত বছরের মার্চ থেকে দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করে আসছেন ক্যাসেমিরো। ৩২ বছর বয়সী এ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের বাদ পড়া প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে ব্রাজিল কোচ দরিভাল জুনিয়র বলেছেন, “তিন মাস আগে ক্যাসেমিরোর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তার কাছে আমার কী চাওয়া এবং আমি তাকে কীভাবে মূল্যায়ন করি- তাকে আমি সেসব জানিয়েছি। ভবিষ্যতে তাকে নিয়ে আমি কী ভাবছি- তা নিয়ে আগামীকাল (শনিবার) আমি তার সঙ্গে কথা বলব।”নেইমারের বাদ পড়াটা অবশ্য ব্রাজিল সমর্থকদের অনুমিতই ছিল। হাঁটুর চোটের কারণে অনেক আগে থেকেই মাঠের বাইরে রয়েছেন তিনি। তাই আসন্ন টুর্নামেন্টের তার দলে না থাকাটাই স্বাভাবিক।রিচার্লিসনের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটি এমনই। নতুন করে পায়ের পেশিতে চোট পেয়ে ছিটকে গেছেন তিনি।
এ বিষয়ে দরিভাল বলেন, “ক্লাবের হয়ে খেলতে গিয়ে সাম্প্রতিক চোটই রিচার্লিসনকে ছিটকে দিয়েছে। বিষয়টি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি টটেনহ্যাম। আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে সে-ই আমাদের চোটের বিষয়টি জানিয়েছে।”তবে জাতীয় দলের হয়ে সবশেষ দুই ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পুরস্কার পেয়েছে এন্দ্রিক। চোটজর্জরিত দল নিয়ে এ বছরের মার্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলতে নামে ব্রাজিল। ওই ম্যাচে বদলি হিসেবে অভিষেক হওয়ার ৯ মিনিটের মাথায় ম্যাচের একমাত্র ও জয়সূচক গোলটি করেন এন্দ্রিক।এরপর সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে স্পেনের বিপক্ষে রোমাঞ্চকর লড়াইয়েও গোলের দেখা পান ১৭ বছর বয়সী এই ফুটবলার। অনেকেই তাকে “নতুন পেলে” নামেও ডাকতে শুরু করেছেন। পালমেইরাসে তার মনোমুগ্ধকর পারফরম্যান্সও কোপা আমেরিকার দলে ডাক পেতে ভূমিকা রেখেছে।চলমান বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ভীষণ হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর কোপা আমেরিকা খেলতে যাচ্ছে ব্রাজিল। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এখন পর্যন্ত ছয় ম্যাচ খেলে তারা জিতেছে মাত্র দুটি ম্যাচ; পয়েন্ট টেবিলে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে দরিভালের দল।তবে ইংল্যান্ড ও স্পেনের বিপক্ষে তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স এবং রিয়াল মাদ্রিদে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও রদ্রিগোর দুর্দান্ত ফর্ম অবশ্য ভক্তদের আশা দেখাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে আগামী ২০ জুন শুরু হতে চলেছে এবারের কোপা আমেরিকার আসর। তার আগে ৮ ও ১২ জুন যথাক্রমে মেক্সিকো ও স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে ব্রাজিল।২৪ জুন কোস্টারিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টুর্নামেন্টে যাত্রা শুরু হবে ব্রাজিলের। “ডি” গ্রুপে তাদের অন্য দুই প্রতিপক্ষ প্যারাগুয়ে ও কলম্বিয়া।
২০১৯ সালে সবশেষ লাতিন আমেরিকা সেরার শিরোপা জিতেছিল ব্রাজিল। পরের বার ২০২১ সালে ঘরের মাঠে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে হেরে যায় তারা।এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশিবার এই ট্রফিটি জিতেছে আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ে। দুটি দেশই ১৫ বার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ব্রাজিলের ঘরে গেছে ৯টি শিরোপা। এছাড়া চিলি, প্যারাগুয়ে ও পেরু জিতেছে দুবার করে, আর একবার করে শিরোপা নিয়েছে বলিভিয়া ও কলম্বিয়া।