চলতি বছরের জুলাইয়ে ৪২ বছরে পা দেবেন টেস্ট ক্রিকেটে একমাত্র ৭০০ উইকেটধারী পেসার জেমস অ্যান্ডারসন। যদিও নিজের ফিটনেস ও পারফরম্যান্সে সেই ছাপ কখনও ফুটে ওঠেনি। তবুও তরুণ ক্রিকেটাররা যখন জাতীয় দলের জায়গা দখলে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন, তখন কিংবদন্তি ক্রিকেটারের বিদায়ের সময় নিয়েও প্রশ্ন এসে যায়। তবে অ্যান্ডারসন নিজে কিছু বলেননি, ইংল্যান্ডের টেস্ট কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম জানালেন এই পেসারের বিদায়ের সময়!
সাবেক কিউই অধিনায়কের সেই কথার সূত্র ধরে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ইংল্যান্ডের গ্রীষ্মকালীন মৌসুম শেষেই ২২ বছরের ক্যারিয়ার শেষ করবেন ৪১ বছর বয়সী পেসার। মূলত অ্যান্ডারসনের বিকল্প পেসার বেছে নেওয়ার প্রক্রিয়ায় নেমেছেন ম্যাককালাম। সে কারণে তিনি রেকর্ডধারী বোলারকে নিজের পরিকল্পনা ও তার বিদায়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে ১১০০০ মাইল পাড়ি দিয়ে এসেছেন নিউজিল্যান্ড থেকে।
ইংল্যান্ডের এই টেস্ট কোচের ইচ্ছা ২০২৫-২৬ মৌসুমের ঐতিহাসিক অ্যাশেজ শুরুর আগেই শক্ত দল গড়ে তোলা। ওই সময়ে অ্যান্ডারসনের বয়স চলতে শুরু করবে ৪৩ বছরে। এর আগে চলতি বছরের গ্রীষ্ম মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মোট ৬টি টেস্ট খেলবে ইংল্যান্ড। যেখানে আগস্টের শেষ দিকে ঘরের মাঠ ওল্ড ট্রাফোর্ডে একটি টেস্ট খেলবে তারা। অ্যান্ডারসনের সম্ভাব্য বিদায়ী টেস্ট ধরা হচ্ছে সেই ম্যাচটিকে।
এদিকে, শনিবার সংবাদমাধ্যম বিবিসির সঙ্গে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ডের নারী ক্রিকেট দলের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ধারাভাষ্য দেওয়ার কথা রয়েছে অ্যান্ডারসনের। সেখানেই নিজের ভবিষ্যত নিয়ে তিনি কথা বলবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে গতকাল ইএসপিএন যোগাযোগ করেছিল ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) সঙ্গে। তবে এ নিয়ে তারা কোনো মন্তব্য করেনি।
এর আগে ইংল্যান্ডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রব কি চলতি বছরের শুরুতেও প্রায় একই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সে সময় তিনি স্টুয়ার্ট ব্রডের অবসর পরবর্তী সময়ের জন্য নতুন বোলারের অনুসন্ধানের কথা জানান, নতুন প্রজন্ম থেকে যারা ইংলিশদের এগিয়ে নিয়ে যাবে। গত গ্রীষ্ম শেষেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন ব্রড। ওই সময় ভবিষ্যতের জন্য বেশ কয়েকজন বোলারের নামও উচ্চারণ করেন রব কি। তারা হচ্ছেন– ব্রাইডন কার্স, জস টাঙ, ম্যাট পটস, গুস অ্যাটকিনসন, ম্যাট ফিশার, সাকিব মাহমুদ ও জন টার্নার।
চলতি বছরের শুরুর দিকে ভারত সফরের শেষ টেস্টে ৭০০ উইকেটের মাইলস্টোন ছুঁয়েছিলেন অ্যান্ডারসন। মুত্তিয়া মুরালিধরন (৮০০) ও শেন ওয়ার্নের (৭০৮) পর বিশ্বের তৃতীয় বোলার হিসেবে টেস্টে ৭০০ উইকেট ক্লাবের সদস্য হন অ্যান্ডারসন। তবে পেসার হিসেবে এই কীর্তির নজির একমাত্র তার। ওই সিরিজে তার ওয়ার্কলোডের দিকে কড়া নজর ছিল ইংল্যান্ডের টিম ম্যানেজমেন্টের। ৭টি ইনিংসে সাকুল্যে ১১০ ওভার বল করে ১০টি উইকেট নেন তিনি। তার আগে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া সিরিজে বিশেষ ছাপ রাখতে ব্যর্থ হন অ্যান্ডারসন।
এখন পর্যন্ত ইংল্যান্ডের হয়ে ১৮৭টি টেস্ট খেলেছেন অ্যান্ডারসন। ৭০০টি উইকেটধারী এই পেসার ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন ৩২ বার। দুই ইনিংস মিলিয়ে ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন মোট ৩ বার। এক ইনিংসে সেরা বোলিং পারফর্ম্যান্স ৪২ রানে ৭ উইকেট। ব্যাট হাতে টেস্টে এক হাফসেঞ্চুরির পাশাপাশি ১৩৫৩ রান সংগ্রহ করেছেন অ্যান্ডারসন। মূলত টেস্টই ছিল তার এতদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে থাকার প্রধান কারণ। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে তিনি অনেক আগেই মাঠে নেমেছিলেন। ১৯৪টি ওয়ানডেতে ২৬৯ এবং ১৯টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তিনি ১৮ উইকেট শিকার করেছেন।