ডোনাল্ড লু বিএনপির কাছে অত বেশি গুরুত্বপূর্ণ নন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।এর আগে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
গণমাধ্যমকর্মীরা দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে আসছেন। আজকেও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি বা বিদেশি কোনো শক্তি বিএনপিকে চাঙ্গা করবে এমন আশা করে লাভ নেই।এ ব্যাপারে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘উনার আশা-নিরাশায় আমাদের কিছু আসে-যায় না। ডোনাল্ড লুর ব্যাপারটা অতখানি গুরুত্বপূর্ণ মনে করলে আমরা বলতাম; আমরা কিন্তু তা বলি নাই। আপনি কিন্তু তুলেছেন এ প্রশ্ন। আমাদের কাছে এটা (ডোনাল্ড লু) এতটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, যতটা গুরুত্বপূর্ণ কুকি-চিনের আচরণ, যেটা নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার প্র্যাকটিক্যালি ব্যর্থ হচ্ছে।’তিনি আরও বলেন, ‘ডোনাল্ড লু তো অনেক দূরের মানুষ। আমরা শঙ্কিত আমার নিজের দেশের অবস্থা নিয়ে। আমরা শঙ্কিত আমার দেশের অবস্থা নিয়ে। আমরা শঙ্কিত আমাদের দেশের যে ব্যাংক লুটেরা, তাদেরকে মুক্ত করার জন্য সরকারের যে অপচেষ্টা, ওটা নিয়ে।’বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যুগপৎ আন্দোলনে বিভিন্ন দল ও জোটের সঙ্গে আমরা আলোচনা করছি। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা সমমনা জোটের সঙ্গে আলোচনা করেছি।’
দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে নজরুল বলেন, ‘আমাদের আলোচনায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুৎ-পানির সংকটের বিষয় এসেছে। পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক সংকট—টাকার অবমূল্যায়ন, ব্যাংকসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান লুট, রাষ্ট্রীয় ঋণের দ্রুত বৃদ্ধি এবং আমাদের দেশের সীমান্তে মানুষ হত্যা, মিয়ানমার থেকে যে নতুন ঘটনাগুলো ঘটছে, এ সবগুলো বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।আমরা একমত হয়েছি, বিষয়গুলো নিয়ে জনগণকে সম্পৃক্ত করে আমরা আগামী দিনে কীভাবে সামনের দিকে অগ্রসর হতে পারি; সে নিয়ে আমরা কর্মসূচি গ্রহণ করার চিন্তা করছি,’ জানান তিনি।
এদিন দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার, আমরা কাকে ভয় পাব?’গণমাধ্যমকর্মরা প্রশ্ন করেন, মার্কিন সরকারের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে আসবেন। তার আগে আগে বিএনপি আন্দোলনের কথা বলছে। সেটা কি তাদের শক্তির জায়গা নাকি? জবাবে কাদের বলেন, ‘কোথাকার এক…তাদের প্রেসিডেন্টের কথা ইসরায়েল শোনে না!’
কাদের বলেন, ‘নেতানিয়াহু প্রকাশ্যে বলেছেন, বাইডেনের সঙ্গে আমাদের আগেও পার্থক্য ছিল, কাজেই বাইডেন কী বললো…আমাদের কাজ আমরা করব, প্রয়োজনে আমরা একা যুদ্ধ করব কিন্তু রাফা আক্রমণে বাইডেনের নির্দেশ তারা চরমভাবে উপেক্ষা করেছে। এখন আমরা যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার, আমরা কাকে ভয় পাব? সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী, তিনি আসছেন, তাদের কোনো উদ্দেশ্য আছে আমরা জানি না। কিন্তু আমরা এটা বলতে চাই যে, কেউ আমাদের দেশে এসে এখানে বিএনপিকে আবারও মদদ দেবে, চাঙ্গা করবে, সেই পরিস্থিতি বোধ হয় এখন বিশ্ব রাজনীতিতে মোটেই নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা এ দাপটটা দেখাবে, তাদের দাপট দেখানোর ক্ষমতাটা মধ্যপ্রাচ্যেই সংকুচিত হয়ে আছে। এখানে বিস্তৃত হবে, এমন মনে করার কোনো কারণ নেই।’