নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান একজন ব্যবসায়ী নেতা। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি হিসেবে পালন করছেন। নিট গার্মেন্ট উইজডম অ্যাটায়ার্স লিমিটেডের মালিকও তিনি। তবে এসবের বাইরে তার আরেকটি পরিচয় হচ্ছে তিনি একজন সফল কৃষক।
দীর্ঘ প্রায় দেড়যুগ ধরে গরু, ছাগল ও ভেড়া পালন এবং বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও সবজি চাষাবাদ করে আসছেন সেলিম ওসমান। বছরজুড়েই বিভিন্ন রকমের ফসল-ফলাদি ফলিয়ে থাকেন তিনি। খুলনায় রয়েছে বিশাল কৃষি খামার। পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকায় গরুর খামার রয়েছে।প্রতিবছরই কোরবানির ঈদে বিভিন্ন জাতের দেড় থেকে দুইশ গরু বিক্রি করে থাকেন এই সংসদ সদস্য। এবারের ঈদে বিক্রির জন্য গরু, মহিষ ও গাড়লসহ ১৪১টি পশু প্রস্তত করা হয়েছে তার খামারে। যার আনুমানিক মূল্য ধরা হয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সেলিম ওসমানের মালিকানাধীন উইজডম অ্যাটায়ার্স লিমিটেড সংলগ্ন গরুর খামারে লাইভ ওজনে গরু বিক্রি করা হচ্ছে।সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সেলিম ওসমানের খামারে শাহিওয়াল জাতের ৪১টি, পাকড়া ২৬টি, গির ২০টি, ফ্রিজিয়ান পাঁচটি, ব্রাহমা সাতটি, দেশি ১০টি, বুট্টি তিনটি, মহিষ ১৫টি ও গাড়ল ১৪টিসহ মোট ১৪১টি কোরবানির পশু বিক্রি করা হবে। গরুগুলো লাইভ ওয়েটে ৩০০-৩৯৯ কেজি পর্যন্ত ৪৮৫ টাকা, ৪০০-৪৯৯ কেজি পর্যন্ত ৫২৫ টাকা, ৫০০-৬০০ কেজি পর্যন্ত ৬০০ টাকা এবং গাড়ল ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হবে।কোরবানির পশু বিক্রি প্রসঙ্গে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেন, ‘আমি প্রায় ২০ বছরের ওপরে গরু পালন করে আসছি। আগে এটা আমার শখ ছিল, এখন এটা আমার পেশা। তবে এই পেশার টাকাটা এখন পর্যন্ত ব্যক্তিগত কাজে লাগাইনি। এটা দিয়ে সামাজিক উন্নয়নকাজ করেছি। বেশ কয়েকটা স্কুল নির্মাণ করেছি। গত কোরবানির গরু বিক্রির টাকা দিয়ে মাদরাসা নির্মাণ করেছি। এবারের টাকাও ভালো কাজে লাগানোর চেষ্টা করবো। আমার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব যারা আছেন তারা আমার এখান থেকেই গরু কেনেন।’তিনি আরও বলেন, ‘আমার এখানে সবধরনের গরু থাকে। এক লাখ টাকা শুরু করে ছয় লাখ টাকা দামের গরু আছে। কয়েক জাতের মহিষ আছে। এবার লাভের চিন্তা করছি না। শুধু যে খরচ হয়েছে আমরা সে দামেই বিক্রি করবো। আমরা কোনো লাভে যাবো না। আশা করি তিন কোটি টাকার মতো গরু বিক্রি করতে পারবো।’সেলিম ওসমানের সহধর্মিণী নাসরিন ওসমান বলেন, ‘আমরা কোরবানির গরু বিক্রির টাকা দিয়ে সামাজিক কাজগুলো করে থাকি। সেলিম ওসমান এমপি হওয়ার আগে থেকেই এ কাজগুলো কাজ করে আসছেন। স্কুল-কলেজ-মাদরাসা, দরিদ্র মানুষের চিকিৎসাসহ জনহিতকর কাজ করা হয় এ টাকা দিয়ে। এবারও পশু বিক্রির টাকা জনহিতকর কাজে ব্যয় করা হবে।’নিট পোশাক শিল্পমালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সহ-সভাপতি মোর্শেদ সারোয়ার সোহেল বলেন, আমাদের এমপি ও ব্যবসায়ী নেতা সেলিম ওসমান প্রতিবছর কোরবানির ঈদে পশু বিক্রি করে আসছেন। এবারও তিনি কোরবানির পশু বিক্রি করবেন। পশু বিক্রির টাকাগুলো তিনি সামাজিক কাজে ব্যয় করে থাকেন। এটি একটি মহৎ উদ্যোগ।