নারায়ণগঞ্জ আপডেট ঃ
কাশিপুর ২ নং ওয়ার্ডের দুই দুইবারের নির্বাচিত ইউপি মেম্বার এমদাদুল হক খোকা কে ফাঁসানোর জন্য একটি কুৎচিত মহল উপচে পড়ে লেগেছে।
সুরুজ মেম্বার হত্যাকান্ডের সাথে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ এমদাদুল হক খোকার দুই বারের নির্বাচিত মেম্বার হলেও দুই নং ওয়ার্ডের ভাড়াটিয়া বাসিন্দা এই ইউপি সদস্য।
এলাকায় আরো খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে ছালু এক সময় বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল, ছালুর ভাই সালাউদ্দিন হিরাও এক সময় বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল গা বাঁচাতে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।এদিকে দুই নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ইমদাদুল হক খোকা সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন সালাউদ্দিন সালু কে আমি চিনি না, আমি তার চেহারাও কখনো দেখিনি আমার সাথে রাজনীতি করা তো দূরের কথা, একটি কুৎসিত মহল আমিসহ আমার পরিবারকে ফাঁসানোর জন্য ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করে ইমদাদুল হক খোকা। ইপি সদস্য আরো বলেন একটি অচেনা নাম্বার থেকে (২৮) জুন দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে একটি মোবাইল নাম্বার থেকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয় যার নাম্বার (০১৬৮২৮৫৬৪৩৩)। ইউপি সদস্য খোকা বলেন আমি সহ আমার
পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। প্রশাসনের প্রতি তিনি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন সুষ্ঠু তদন্ত করে সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনা হয়। জেলা পুলিশ সুপার ও ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নূরে আজম এর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সেই সাথে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরওবিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানান এমদাদুল হক খোকা।
দীর্ঘদীন ধরেই স্থানীয় এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগ নেতা সুরুজ মিয়া এবং সালাউদ্দীনের মাঝে দ্বন্ধ চলে আসছিল। কাশিঁপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের আতঙ্কের আরেক নাম সালাউদ্দিন সালু ও সালাউদ্দিন হীরা শীর্ষ সন্ত্রাসী নামে এলাকায় পরিচিত। এদিকে ২ নং ওয়ার্ডের হাইব্রিড আওয়ামী লীগ নেতারা ২ নং ওয়ার্ডের দুইবার নির্বাচিত সফল মেম্বার এমদাদুল হক খোকা কে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্রমূলক মন্তব্য করেন। এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে প্রতিবেদকের আলাপ কালে এলাকাবাসী জানান ২ নং ওয়ার্ড মেম্বার এমদাদুল হক খোকা একজন সৎ লোক তিনি দুইবারের নির্বাচিত।
নিহত আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ’র সথে শীর্ষ সন্ত্রাসী একক আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল এ সালাউদ্দীন এবং হীরা বাহিনী। অপরদিকে, এলাকার পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি ছিলেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা সুরুজ মিয়া।
একের পর এক অপকর্ম করার কারনে, সন্ত্রাসী হীরা এ সালাউদ্দীনের বিরুদ্ধে স্থানীয় এলাকাবাসী সুরুজ মিয়াকে অবহিত করেন। এক পর্যায়ে সুরুজ মিয়া এলাকার ভিতরে অপকর্ম না করার জন্য শাসিঁয়ে দেয় সন্ত্রাসী সালাউদ্দিন এবং হীরাকে। এর জের ধরেই গত বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় মসজিদ থেকে নামাজ শেষে ফেরার পথে সন্ত্রাসী সালাউদ্দিন এবং হীরাসহ একদল সন্ত্রাসী এলোপাতারীভাবে কুপিয়ে আওয়ামীলীগ নেতা সুরুজ মিয়াকে আহত করে পালিয়ে যায়।
এসময় স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় সুরুজ মিয়াকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্ত্যবরত চিকিৎসক সুরুজ মিয়াকে মৃত্যু ঘোষনা করেন। এদিকে এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, কাঁশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বেপরোয়া হয়ে উঠে সন্ত্রাসী সালাউদ্দিন এবং হীরা বাহিনী। এমনকি সুরুজ মিয়া হত্যাকান্ডটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা মাফিক করা হয়েছে বলেও এলাকাবাসী মনে করেন।
আওয়ামীলীগ নেতা সুরুজ মিয়া হত্যাকান্ডের সরাসরি হাইব্রি আওয়ামী লীগ নেতারা জড়িতথাকতে পারে বলেও এলাকাবাসীর ধারনা। তাই সুরুজ মিয়া হত্যাকান্ডের বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করে অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচারের আশাবাদী ২ নং ওয়ার্ড এলাকাবাসী এ ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সালাউদ্দিন সালু ও সালাউদ্দিন হিরাকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
প্রসঙ্গত, ফতুল্লার উত্তর কাশিপুরে ইট-বালু ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ কে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকাল ৫টার দিকে কাশিপুর আলীপাড়া এলাকায় মসজিদের সামনে আওয়ামীলীগ নেতা সুরুজ মিয়া (৬৫) কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। নিহত সুরুজ মেম্বার ফতুল্লার কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি আলীপাড়া জামে মসজিদ কমিটির সভাপতিও ছিলেন।
নিহত সুরুজ মিয়ার ভাগিনা নুর হোসেন লিখন ও আহত জনির ভাতিজা রিয়াজ উদ্দিন জানান, তাদের বাড়ি ফতুল্লার উত্তর কাশিপুর আলীপাড়া গ্রামে। তাদের অটোরিকশার গ্যারেজ ও ইট-বালুর ব্যবসা রয়েছে। ব্যবসা নিয়ে এলাকার সালাউদ্দিন সালু ও আলাউদ্দিন হিরার সঙ্গে তাদের বিরোধ ছিল। এ ছাড়া, সালু ও হিরা এলাকার একটি নির্মানাধীন ভবনে গিয়ে আজ সকালে চাঁদা দাবি করে। ওই ভবনের মালিক এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি হিসেবে সুরুজ মিয়ার কাছে বিচার দেন। এটি নিয়ে সুরুজ মিয়া হিরা ও সালুকে শাসন করেন। তারা আরও জানান, এর জের ধরে এলাকার মসজিদে যোহরের নামাজ পড়তে গেলে সুরুজ মিয়ার ওপর অতর্কিত হামলা চালায় সালু, হিরাসহ ২০-২৫ জনের একটি দল। তাদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুরুজ মিয়াকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে ছেলেসহ স্বজনরা এগিয়ে গেলে তাদেরকেও আঘাত করে ঘাতকরা। পরে আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক সুরুজ মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরে আযম মিয়া জানান,সংবাদ পেয়ে তিনি সহ পুলিশের একাধিট টিম ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। প্রাথমিক ভাবে জানা যায় যে, ইট-বালুর ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ কে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। প্রথমে তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। এমনকি এঘটনার সাথে যত বড় প্রভাবশালী ব্যাক্তিই জড়িত থাকুক না কেন তাদেরকে অতিদ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।