নারায়ণগঞ্জ আপডেট: আগের ৯ ম্যাচে কোনো সেঞ্চুরি নেই। তিন হাফ সেঞ্চুরিই ছিল সঙ্গী ইশান কিশানের। তার রান ছিল মোটে ২৬৭। তবে এ বছর অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শতরানের খুব কাছকাছি চলে গিয়েছিলেন ইশান। ৭ রানের জন্য পাননি তিন অংকের দেখা।
৮৪ বলে ৭ ছক্কা আর ৪ বাউন্ডারিতে সাজানো ইনিংসটি শেষ হয় ৯৩ রানে। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ওই ঝড়ো ইনিংসটিই বলে দিয়েছে ইশান কিশান অনেক দুর যেতে পারবেন। ব্যাট হাতে ঝড় তোলার ক্ষমতা আছে পাটনার এ বাঁ-হাতি উইকেটরক্ষক কাম ব্যাটারের।
শনিবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ১৩১ বলে ২১০ রানের উত্তাল ইনিংস খেলে ইশান কিশান জানিয়ে দিলেন, নিজের দিনে তিনি কি করতে পারেন। তার উইলোর দাপট কতটা এবং সেই সংহারমূর্তির সামনে প্রতিপক্ষ বোলাররা কতটা অসহায়। ছোট্ট পরিসংখ্যানেই তা পরিষ্কার হবে, ইশান কিশান ১০টি ছক্কার সঙ্গে হাঁকিয়েছেন ২ ডজন বাউন্ডারি। মানে ৬০+৯৬= ১৫৬ রান করেছেন শুধু চার ও ছক্কা হাঁকিয়েই।
এমন এক বিধ্বংসী ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানোর পর আবেগতাড়িত হয়ে যাওয়ার কথা; কিন্তু ইশান কিশান ভাবলেশহীন, ‘আমি অধিনায়ক রোহিত শর্মার জায়গায় খেলার সুযোগ পেয়েছি।’
সরাসরি এমন কথা বলেননি। তবে ইশান কিশান বোঝাতে চেয়েছেন, তিনি যে পজিসনে খেলেছেন সেটা আসলে তার নিয়মিত পজিসন নয়। তিনি সুযোগ পেয়েছেন এবং তা কাজে লাগিয়েছেন।
ইশান কিশানের কথা, আমি প্রথম ২ ম্যাচ খেলিনি। আমাদের অপেক্ষায় থাকতে হয় কখন সুযোগ আসবে তার জন্য। এ মুহুর্তে আমরাতো এর বেশি জিজ্ঞেস করতে পারি না। যখনই সুযোগ মেলে তখনই আমরা তা কাজে লাগানোর প্রাণপন চেষ্টা করি। ’
আজ ওপেন করার সুযোগ পাওয়ার অনুভুতি প্রকাশ করতে গিয়ে ইশান কিশান বলেন, ‘শুরুতে ব্যাট করার সুযোগ পাওয়াটা ছিল বেশ ভাল।’
তখন কি ভেবেছিলেন এমন এক বিরাট ও বিধ্বংসি ডাবল সেঞ্চুরি হাকাতে পারবে? ইশানের জবাব, ‘আমি কিছুই ভাবিনি। শুধু ব্যাটিং করে গেছি। শুধু আলগা বলের অপেক্ষায় ছিলাম।’
কখন মনে হলো আপনি সেঞ্চুরি করতে যাচ্ছেন? ইশানের জবাব, ‘যখন ৯৫ থেকে ৯৭-তে পা রাখলাম, তখন মনে হলো সেঞ্চুরি হয়ে যেতে পারে।’
তার অকপট স্বীকারোক্তি, শতরান পূর্ণ করার পরও ডাবল সেঞ্চুরির চিন্তা মাথায় আসেনি। তাইতো মুখে এমন কথা, সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পরও ভাবিনি ডাবল সেঞ্চুরি করতে পারবো। আমি শুধু মেরে খেলছিলাম । তবে যখন আউট হয়ে গেলাম, তখন মনে হলো আরে আমার সামনেতো ট্রিপল সেঞ্চুরির হাতছানি ছিল। আমি ১৫ ওভার বাকি থাকতে আউট হয়েছি। তার মধ্যে ৪৫টি বল খেলত পারলেও আমার মনে হয় ৩০০ রান হয়ে যেতো আমার। আমি তখন ওয়েল সেট। বোলাররা চাপে ছিল; কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমি পারিনি।’
এ বিরাট ইনিংসটা তার প্রতিষ্ঠায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে এমন বিশ্বাস ইশান কিশানের । ‘অনেক লিজেন্ডসদের সাথে আমার নাম উচ্চারিত হবে, এটা অনেক বড় ব্যাপার। এ অনুভুতিটা দারুন।’
‘এর মধ্যে যখন বিরাট কোহলি আসলেন আমার সঙ্গে জুটি বাধতে, তখন মনে হলো ওহহ, কি দারুন সুযোগ তার সাথে খেলার! এমন সব বড় মাপের ব্যাটারদের সাথে অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে অনেক কিছু শেখার আছে। আমি চেষ্টা করেছি বিরাটের সাথে কথা বলতে। পরেতো বড় পার্টনারশিপ গড়ে উঠল। আমি ভাবিনি এত বড় জুটি গড়তে পারবো ।