1. sajujournalist123@gmail.com : Selim Mahmud : Selim Mahmud
  2. admin@ganomaddhom.com : nvl5d :
  3. salemo1834949@gmail.com : Selim Mahmud : Selim Mahmud
চাষাড়া শহীদ জিয়া হলের জিয়াউর রহমানের ছবি স্থাপন করলেন মোহাম্মদ সাহেব উল্লাহ (রোমান) - নারায়ণগঞ্জ আপডেট
মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট
নারায়ণগঞ্জ  মহানগর গোগনগর ইউনিয়ন  যুবদল  সাদপন্থীদের সকল কার্যক্রম স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধের দাবি উলামা মাশায়েখদের বন্দর থানা অটোরিক্সা ও সিএনজি শ্রমিক কল্যাণ বহুমূখী সমবায় সমিতির কমিটি ঘোষনা ও পরিচিত সভা অনুষ্ঠিত বিকেএমইএ‘র ব্যবসায়ী সংগঠনের স্মারকলিপি ফতুল্লা থানায় অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে হত্যা মামলার আসামি মুক্ত, পুলিশ বলছে অবজারভেশনে ছিল। নারায়ণগঞ্জে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতির একাল-সেকাল নারায়ণগঞ্জ জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে তাসমিন আক্তার পিপিএম’র যোগদান বন্দরে সিএসডিতে সরকারি খাল দখল করে পাকা ঘর নির্মাণের অভিযোগ আসমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজদের তালিকা হচ্ছে, দু-এক দিনের মধ্যে ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার

চাষাড়া শহীদ জিয়া হলের জিয়াউর রহমানের ছবি স্থাপন করলেন মোহাম্মদ সাহেব উল্লাহ (রোমান)

নারায়ণগঞ্জ আপডেট
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৪
  • ১৩২ Time View

ইতিহাসকে পক্ষে নেয়ার রাজনৈতিক প্রয়াস নতুন নয়। কালে কালে দেশে দেশে তা হয়েছে। তবে আমরা সম্ভবত এই চর্চায় সবচেয়ে বেশিই অগ্রসর। কিন্তু রাজনৈতিক মিথ্যাচার সাময়িক বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারলেও আখেরে তা টেকে না। নিজেকে উচ্চাসনে সমাসিন দেখানোর জন্য অতীত সম্পর্কে ভুল-ভাল তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার প্রচেষ্টা শামীম ওসমানের নতুন নয়। নতুন প্রজন্মের কাছে ভুল বার্তা যায়, আর সেজন্যই এই অবতারণা। গত ৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে সাংসদ শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জের ‘জিয়া হল’কে ‘৬ দফা ভবন’ করার দাবি জানিয়ে কিছু ভুল তথ্য হাজির করেছেন।

শামীম ওসমান দাবি করেন নারায়ণগঞ্জের বালুরমাঠটি ৬ দফার জন্য বিখ্যাত হয়ে আছে, পরে জিয়াউর রহমান বা খালেদা জিয়া সে ইতিহাস মুছে দেয়ার জন্য সেখানে ‘জিয়া হল’ নির্মাণ করেছেন। এ দাবিটি সর্বৈব অসত্য। আলোচিত স্থানটিতে মিলনায়তন করার দাবিটি উত্থাপিত হয় ১৯৫৬ সালে; আর এই স্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ৬ দফা দাবির পক্ষে ভাসন দেন ১৯৬৬ সালের ৮ মে তারিখে। আর ৬ দফার দাবি এখানে প্রথম তোলাও হয় নাই।

১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু লাহোরে চৌধুরী মোহাম্মদ আলেীর বাসভবনে অনুষ্ঠিত বিরোধী রাজনৈতিক সমাবেশে প্রথম ৬ দফা দাবি তুলে ধরেন। পরে ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে তিনি ৬ দফা ব্যাখ্যা করেন। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে চট্টগ্রামের লালদিঘি ময়দানে বঙ্গবন্ধু প্রথম প্রকাশ্য জনসভায় ৬ দফা তুলে ধরেন। ১৮ মার্চ ঢাকার ইডেন হোটেলে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে ১৬ পৃষ্ঠার পুস্তিকা আকারে তা বিলি করা হয়। নারায়ণগঞ্জের বালুরমাঠে বঙ্গবন্ধুর সমাবেশটি হয় ৮ মে। সেখানে তিনি ৬ দফার পক্ষে বক্তৃতা করেন। এবং ঢাকায় ফিরে ঐ রাতেই তিনি গ্রেপ্তার হন।

নারায়ণগঞ্জে নাট্য-কর্মীরা নাটক মঞ্চায়ন ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য নারায়ণগঞ্জে স্থায়ী একটি মিলনায়তন নির্মাণের দাবি তুলেছিলেন ১৯৫৬ সালে। তৎকালীন স্থানীয় মহকুমা প্রশাসক আবদুস সাত্তার এ দাবির সাথে একাত্ম হয়ে নারায়ণগঞ্জে একটি টাউনহল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। চাষাঢ়ার এই বালুরমাঠে টাউনহল নির্মাণের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। অর্থায়নের জন্য বর্তমান ডায়মণ্ড সিনেমা হলে সপ্তাহ ব্যাপী নাটক প্রদর্শিত হয়। এ প্রদর্শনী থেকে ৯৬ হাজার টাকা সংগৃহিত হয়। এ নাট্য-সপ্তাহ আয়োজনের উদ্যোক্তা ছিলেন আবদুর রউফ, স্মৃতিময় বন্দোপাধ্যায়, বশির আহমেদ প্রমুখ নাট্যকর্মীবৃন্দ। আর সে সময় টাউন হল নির্মাণের জন্য উদ্যোগী ভূমিকা রাখেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক, কয়েকজন মেজিষ্ট্রেট এবং নারায়ণগঞ্জের হাবিব করিম, কফিলউদ্দিন আহাম্মদ, তৈয়ব কাপাটিয়া, গোলাম রব্বানী, রেজাউর রহমান প্রমুখ। কিন্তু টাউন হল নির্মাণের কাজ শুরু করা যায় নি। পরে ষাটের দশকের শুরুতে আবার টাউন হল নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয়। সে সময়ও তা কার্যকর হয় নি। তখন শুধুমাত্র জায়গা ক্রয়ের জন্য ডিআইটিতে ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।

স্বাধীনতার পর আবার নতুন করে টাউন হল নির্মাণের তৎপরতা শুরু হয়। ১৯৭৬ সালে তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক আবদুল হাই সরকার পাঁচ লক্ষ টাকার তহবিল সংগ্রহ করে টাউন হলের কাজ শুরু করেন। ১৯৭৭ সালের ৮ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নারায়ণগঞ্জ পৌর মিলনায়তনে এলে নারায়ণগঞ্জের মানুষ চাষাঢ়া বালুর মাঠে ‘টাউন হল’ নির্মাণ এবং একটি হাসপাতাল তৈরির দাবি জানান। সে সভাতেই জিয়াউর রহমান এই প্রতিষ্ঠান দু’টি করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এবং তখনই তিনি প্রশাসনকে টাউন হল নির্মাণের নির্দেশ দেন। সে বিষয়ে তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক এ.এফ.এম. ইমাম হোসেন, জেলা প্রশাসক এ.এম. শওকত আলী, বিভাগীয় কমিশনার এম. খানে আলম খান এবং নারায়ণগঞ্জ শহর উন্নয়ন কমিটির সদস্যদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। জিয়াউর রহমান সে বছরই টাউন হলের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ২৫ লক্ষ ২০ হাজার ৯২০ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। এছাড়াও আনুসাঙ্গিক অন্যান্য ব্যায়ের জন্য আরও ১০ লক্ষ ৩৫ হাজার ৬৫৯ টাকা ছাড় করা হয়। ১৯৮১ সালের ১৯ জুলাই তৎকালীন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার মিলনায়তনটি উদ্বোধন করেন। কিন্তু সে বছর ৩০ মে জিয়াউর রহমান নিহত হলে সরকার মিলনায়তনটির নাম ‘শহীদ জিয়া হল’ করে। হল নির্মাণ বা পরে এর নামকরণ নিয়ে কখনো কোন প্রতিবাদ, অপ্রীতিকর ঘটনা তখন বা পরে কখনো ঘটে নি, কেউ কখনো এ ব্যপারে জেলেও যায় নি। এ বিষয়ে শামীম ওসমানের প্রতিবাদ করার দাবি ভিত্তিহীন।

এই জিয়া হলটি শুরু থেকে স্থানীয় মহকুমা ও পরে জেলা প্রশাসক দ্বারা পরিচালিত হয়ে এসেছে। বিগত একযুগ ধরে এ হলটি সম্পূর্ণ ব্যবহারের অনুপযোগী। কিন্তু কখনোই এই হলটি সাধারণের ব্যাহারের জন্য উন্মুক্ত ছিল না। উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে এরশাদের শাসনামলে দীর্ঘ দিনই বলা চলে এইটি সামরিক কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্দ থেকেছে। পরে এরশাদ শাসনের অবসান হলেও এইটি স্থানীয় সংস্কৃতি চর্চার জন্য উন্মুক্ত হয় নাই। বিভিন্ন সময় সরকারী অনুষ্ঠান ব্যতিত শুরু থেকেই এই হলটি ছিল সাধারণের অধিকারের বাইরে। নামের কারণে আওয়ামী লীগের বিশ বছরের শাসনামলে এইটি উপেক্ষিত থেকেছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে এই হলটিকে ‘মুক্তিযোদ্ধা মিলনায়তন’ নামে সরকারের প্রয়োজনে ব্যবহার করলেও এইটি স্থানীয় সংস্কৃতি চর্চার জন্য উন্মুক্ত ছিল না। শুরু থেকে এই হলটি রাজনৈতিক বৃত্তের চক্রে যে ভাবে আবদ্ধ হয়েছে তা নারায়ণগঞ্জে মানুষের জন্য মঙ্গলজনক নয়। শিক্ষা ও সংস্কৃতির সাথে সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাজনীতির দুষ্ট চক্র থেকে মুক্ত করা এখন সময়ের দাবি।

গত ৩ এপ্রিল রাতে চাষাড়ায় অবস্থিত শহীদ জিয়া হলে দুর্বৃত্তরা প্রবেশ করে জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল চিত্রটি ভেঙ্গে ফেলে। উক্ত প্রাচীন হলটিকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন দলের লোকজনদের যে আক্রোশ তা আমরা বরাবরই লক্ষ্য করেছি।
বহুবছর যাবত জিয়া হল’কে সংস্কার এবং আধুনিকায়ন না করে বছরের পর বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছিলো। এখন এই জিয়া হল ভেঙ্গে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে তারা। জিয়া হল ভেঙ্গে ফেলার সিদ্ধান্ত এবং রাতের আধারে ম্যুরাল চিত্রটি ভেঙ্গে ফেলা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের মূল্যবোধকে কলঙ্কিত করে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মেজর জিয়াউর রহমানের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা ছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধে জিয়াউর রহমান যুদ্ধ পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালের এপ্রিল হতে জুন পর্যন্ত ১ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার এবং পরবর্তীতে জুন হতে অক্টোবর পর্যন্ত যুগপৎ ১১ নম্বর সেক্টরের ও জেড-ফোর্সের কমান্ডার হিসেবে তিনি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
আমরা স্পৃষ্টভাবে মনে করি, সাবেক সরকার মুক্তিযুদ্ধকে দলীলকরণ করেছে। দলীলকরণের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের অবদানকে অস্বীকার করছে। কেবলমাত্র জিয়াউর রহমান নয় এ অঞ্চলের অবিসংবাদী নেতা মওলানা ভাসানীসহ জাতীয় ৪ নেতাকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চাইছে।
গত ৩ টি জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধীদলের উপর ব্যাপক দমন-পীড়ন, নির্যাতন চালিয়ে বিরোধীমত দমনের সমস্ত হীন চেষ্টা চালিয়ে এসেছে এবং বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকারসহ সমস্ত গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। কার্যত বর্তমান সরকার বাংলাদেশে একদলীয় স্বৈরাচারী সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে।
নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাবেক সাংসদ শহীদ জিয়াকে ভেঙ্গে এখানে ‘৬ দফা মঞ্চ’ করার জন্য তোরজোড় শুরু করেছেন। আমরা মনে করি, শহীদ জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল চিত্রটি রাতের আধারে ভেঙ্গে ফেলার সাথে সাংসদের প্রস্তাবিত ছয় দফা মঞ্চ নির্মাণের যোগসূত্র আছে। আমরা এই ঘৃণ্য তৎপরতায় নিন্দা এবং ধিক্কার জানাই।
প্রশাসনের প্রতি আমাদের আহ্বান, যারা এই ম্যুরাল চিত্রটি রাতের অন্ধকারে ভেঙ্গে ফেলেছে
তাদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করুন এবং দ্রুত জিয়া হল’কে নতুন করে সংস্কার এবং আধুনিকায়ন করার জোর দাবি জানাই ।

আরও সংবাদ

আজকের দিন-তারিখ

  • মঙ্গলবার (বিকাল ৪:৫৯)
  • ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
  • ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শীতকাল)
©২০২৩ সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত নারায়ণগঞ্জ আপডেট
Developed BY RIAZUL